টেবিল টেনিসে স্বস্তি খুঁজছেন পারকিনসন রোগীরা

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৩৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি


পারকিনসনে ভোগা রোগীদের জীবনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসার চেষ্টা করে ‘পিং পং পারকিনসন'৷ বিশ্বের অনেক দেশে এর কার্যক্রম বিস্তৃত। জার্মানিতেও অনেক পারকিনসন রোগী এই সংস্থার সদস্য হয়েছেন৷

জার্মানির পশ্চিমের ফুলডা শহরে পিং পং পারকিনসন মিট-আপে পারকিনসন থাকা ১০ জন খেলোয়াড় প্রতি সপ্তাহে এতে অংশ নেন। তাদের একজন সিলকে কিন্ড। তিনি বলেন, ‘‘এটা একটা রীতি৷ এছাড়া পারকিনসনের দৈনন্দিন চাপ থেকে কিছুটা মুক্তির একটা উপায়ও। এই রোগ আপনাকে নিয়মিত মনে করিয়ে দেয় যে, আপনার চলাফেরায় সমস্যা আছে৷ তবে এখানে আপনি সম্পূর্ণ নতুন এক জগতে প্রবেশ করতে পারেন, যেখানে আশেপাশের সবকিছু নগন্য হয়ে যায়৷'' সিলকে কিন্ডের বয়স ৫৬। তিনি ১০ বছর ধরে পারকিনসনে ভুগছেন।

পারকিনসন হলে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে শরীরের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না৷ শরীর ধীর ও শক্ত হয়ে আসে৷ আর কাঁপুনি বাসা বাঁধে। নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই- তবে অনুশীলন কাজে লাগতে পারে।

আর ডোপামিন নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ- কারণ এটি মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষগুলোর মধ্যে সংকেত পাঠায়৷ পারকিনসন হলে এটি খুব কম উৎপাদিত হয়।

সিলকে কিন্ড বলেন, ‘‘প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর ডোপামিন খাই৷ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা না হলে আমার শক্তি ফুরিয়ে যায়৷ জ্বালানি ছাড়াতো গাড়ি চলতে পারে না! ডোপামিন ছাড়া আমি কিছু করতে পারি না”।

পিং পং পাককিনসনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন সিলকে কিন্ড। জার্মানির সব ট্রেনিং গ্রুপের মধ্যে সমন্বয় করেন তিনি৷ অনেক কাজ৷ কারণ, দিন দিন গ্রুপগুলোর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে।

সিলকে কিন্ড বলেন, ‘‘কীভাবে বলটা ধরবেন, তারপর মারবেন, আর বলটা কোথায় ফেলতে চান সেটা নিয়ে আপনি সারাক্ষণ ভাবতে থাকেন। অর্থাৎ মস্তিষ্কে একসঙ্গে অনেককিছু চলতে থাকে- ছোট ছোট অনেক প্রক্রিয়া। এটা ট্রেনিংয়ের জন্য ভালো বলে আমার মনে হয়, কারণ এটা মস্তিষ্ককে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখে।''

প্রতি সপ্তাহে ফিজিওথেরাপিতে ভারসাম্য আর অঙ্গবিন্যাস শেখায়।

ফিজিওথেরাপিস্ট নাদিয়া সেলার বলেন, ‘‘পারকিনসন রোগীদের জন্য নড়াচড়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। শরীর চাঙা রাখতে এবং শরীরের ক্ষয়ে যাওয়া যতদিন সম্ভব বিলম্বিত করতে প্রতি সপ্তাহে কয়েকবার নড়াচড়া করতে হয়।''

পিং পং পারকিনসন আয়োজিত প্রতিটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন সিলকে। ‘‘খেলা আমাকে সবসময় মনে করিয়ে দেয় যে, রোগ থাকলেও যে কোনো কিছু করা সম্ভব৷ এবং ভালো করা সম্ভব৷ অবশ্যই সবকিছু ঠিকঠাক হতে হবে, আর পারকিনসন মাঝেমধ্যে সমস্যা করে৷ কিন্তু এর সঙ্গেই বসবাস করা আপনার শিখতে হবে৷ হতাশ হওয়া যাবে না৷ রোগ নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে,'' বলেন তিনি।

সিলকের মতো অনেককে নতুন জীবন দিয়েছে পিং পং পারকিনসন৷

সূত্র : ডয়চে ভেলে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: