
মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা করেছেন, তার প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্ম কয়েক বছরের মধ্যে সুপারইন্টেলিজেন্স বা মানুষের চেয়েও শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গড়ে তুলতে শত শত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এ লক্ষ্যে তারা একাধিক বিশাল এআই ডেটা সেন্টার নির্মাণ করছে।
সম্প্রতি প্রযুক্তি জগতে চলছে মেধাবী প্রকৌশলীদের জন্য এক ধরনের ‘প্রতিভা যুদ্ধ’। মেটা, গুগল এবং ওপেনএআই’র মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা এই দৌড়ে বহু কোটি ডলারের বেতন দিয়ে প্রতিভা দলে ভেড়াচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জাকারবার্গ জানান, মেটার প্রথম মাল্টি-গিগাওয়াট ডেটা সেন্টারের নাম প্রোমিথিয়াস। তা ২০২৬ সালে চালু হবে। আরেকটি ডেটা সেন্টার হাইপেরিয়ন কয়েক বছরের মধ্যে পাঁচ গিগাওয়াট পর্যন্ত প্রসারিত হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা একাধিক ‘টাইটান ক্লাস্টার’ তৈরি করছি। এর প্রতিটিই নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের একটি বড় অংশের সমান জায়গা দখল করে। জাকারবার্গ ইন্ডাস্ট্রির একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেন। সেখানে বলা হয়েছে মেটা-ই হবে প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা গিগাওয়াট-প্লাস ক্ষমতাসম্পন্ন সুপারক্লাস্টার চালু করবে।
অনেক বিনিয়োগকারী এই বিশাল ব্যয়ে ব্যবসায়িক লাভ কি হবে তা নিয়ে সংশয়ে থাকলেও, জাকারবার্গ বলেন, আমাদের বিজ্ঞাপন ব্যবসা এতটাই শক্তিশালী যে আমরা এই বিনিয়োগ করার সামর্থ্য রাখি। ২০২৪ সালে মেটা প্রায় ১৬৫ বিলিয়ন ডলার আয় করে। এ বছর এখন পর্যন্ত মেটার শেয়ার মূল্য ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বর্তমানে শেয়ারটি ১ শতাংশ উপরে লেনদেন হচ্ছে।
গত মাসে মেটা তাদের এআই কার্যক্রম পুনর্গঠন করে ‘সুপারইন্টেলিজেন্স ল্যাবস’ নামে একটি নতুন বিভাগ তৈরি করেছে। তারা আশা করছে, মেটা এআই অ্যাপ, ছবিকে ভিডিওতে রূপান্তরকারী বিজ্ঞাপন টুলস এবং স্মার্ট গ্লাসেস থেকে নতুন রাজস্ব আসবে। সাবেক স্কেল এআই সিইও আলেকজান্দ্র ওয়াং এবং গিটহাবের সাবেক প্রধান নাট ফ্রিডম্যানকে নিয়ে মেটা এখন এই ল্যাব চালাবে। সম্প্রতি স্কেল এআই’তে ১৪.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে মেটা।
বিশ্লেষক গিল লুরিয়া বলেন, মেটার এই বিপুল বিনিয়োগ প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞাপন ব্যবসার লাভ বৃদ্ধি করেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে তাদের লক্ষ্য হলো বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় এআই মডেল তৈরি করা, যার বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ।
২০২৫ সালের পুঁজি ব্যয় (ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার) বাড়িয়ে ৬৪ বিলিয়ন থেকে ৭২ বিলিয়ন ডলার করেছে মেটা। যাতে তারা ওপেনএআই ও গুগলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে। এই প্রতিযোগিতায় শীর্ষে উঠতে মেটা এখন যেভাবে অ্যাডভার্টাইজিং লাভ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সামর্থ্য ব্যবহার করছে, তা প্রযুক্তি খাতে এক নতুন যুগের সূচনা বলে বিশ্লেষকদের মত।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: