
যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর ২৫০ বছর (দ্বি-শতবার্ষিকী) পূর্তি উপলক্ষে শনিবার ওয়াশিংটনে সমবেত হবে দেশটির সেনারা। যা বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শুরু হওয়ার কথা। কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।
এ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দীর্ঘদিন ধরেই এ ধরনের অনুষ্ঠানের স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। এবার সামরিক এই কুচকাওয়াজে অংশ নেবে প্রায় ৬ হাজার সেনা, ১৫০ টি সামরিক যান ও ৫০ টি বিমান।
ট্রাম্প বলেছেন, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান প্রধান ঐতিহাসিক বিজয়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে সম্মান প্রদর্শন করা হবে। একদিনের ওই অনুষ্ঠানে ব্যয় হবে কমপক্ষে ৪৫ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে অনেকেই ওই পদক্ষেপকে ব্যয়বহুল হিসেবে অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়া করদাতাদের অর্থের যথাযথ প্রয়োগ না করারও অভিযোগ করেছেন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের বহু দেশে সামরিক কুচকাওয়াজ সাধারণ ঘটনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে তা বিরল ঘটনা।
সর্বশেষ ১৯৯১ সালে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সমাপ্তি উদযাপন করতে ৮ হাজার মার্কিন সেনা ওয়াশিংটন ডিসির সড়কে জড়ো হন। আর এ বছর দর্শকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ হলো, ওয়াশিংটন ডিসির সড়কে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানে মহড়া। রাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ইতিমধ্যেই এসব ঐতিহাসিক যুদ্ধযানগুলো টেক্সাসে জড়ো করা হয়েছে।
বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের এসব ঐতিহাসিক যানের মধ্যে রয়েছে এম-১ আব্রামস ট্যাংক, ব্র্যাডলি যুদ্ধযান ও স্ব-চালিত হাউইটজার। প্রত্যেকটি আব্রাম ট্যাংকের ওজন প্রায় ৭০ টন। তাই সেনাবাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো, রাজধানীর সড়কগুলো এত ভারী যানের ওজন বহন করতে পারে কিনা তা নিশ্চিত করা।
ওয়াশিংটন ডিসির পরিবহন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শহরের রাস্তাগুলো সর্বোচ্চ ৪০ টন ওজন বহন করতে পারবে। সড়কের ক্ষতি কমাতে সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীরা গত সপ্তাহে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে ইস্পাতের প্লেট স্থাপন করেছেন। এছাড়া ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানগুলোতে রাবার প্যাডও লাগিয়েছেন তারা। কিছু সড়কের অবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে সাম্প্রতিক কুচকাওয়াজের রুটের দৈর্ঘ্য হ্রাস করা হয়েছে।
কনস্টিটিউশন এভিনিউ এনডব্লিউয়ের কর্ণারের ২৩তম সড়ক থেকে শুরু করে ন্যাশনাল মলের পাশে ১৫তম সড়কে তা শেষ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। সেনা ও সাঁজোয়া যানের সঙ্গে সেখানে অংশ নেবে ৩৪টি ঘোড়া, দুটি মিউল ও একটি কুকুর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া ঐতিহাসিক পি-১ মুস্তাঙ্গ ও বি-২৫ মিশেল বোমারু যুদ্ধবিমানের মতো ঐতিহাসিক যানসহ মোট ৫০ টি বিমান এতে অংশ নেবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পবিরোধী শিবির দেশের বিভিন্ন শহরে সামরিক কুচকাওয়াজ এবং মিঃ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাদের বিরোধিতা প্রকাশ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শ্রমিক ইউনিয়ন এবং উদারপন্থী কর্মীরা "নো কিংস" সমাবেশের মাধ্যমে দিবসটির উদযাপনকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে কাজ করছেন, যাতে তারা প্রধান নির্বাহী হিসেবে মিঃ ট্রাম্পের ভূমিকায় বাড়াবাড়ির প্রতিবাদ করতে পারেন। তবে আয়োজকরা রাজধানীতে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছেন না।
প্রতিবাদকারীরা মনে করেন সামরিক কুচকাওয়াজ কর্তৃত্ববাদী শাসনের উদ্রেক করে। "আমি কখনও রাজকীয় সৈন্য এবং রাস্তায় বড় ট্যাঙ্ক এবং ক্ষেপণাস্ত্রের বড় ভক্ত ছিলাম না," কেন্টাকির রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল এই সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন। "তাই, যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি এটি করতাম না।"
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: