যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম মাংস বিক্রির অনুমোদন

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৩ জুন ২০২৩ ০৪:৪৪

যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম মাংস বিক্রির অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম মাংস বিক্রির অনুমোদন


দুটি কোম্পানিকে ল্যাবে তৈরি কৃত্রিম মাংস বিক্রির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের খাদ্যপণ্য বিক্রির অনুমোদন দিল দেশটির কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)।

কোম্পানি দুটি এরই মধ্যে তাদের চাষকৃত মাংসের অনুমোদনের জন্য বহু পরীক্ষানিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে, দুটি কোম্পানিরই উৎপাদিত মাংস খাবার হিসেবে সম্পূর্ণ নিরাপদ।

এ অনুমোদনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র হতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুরের পর ল্যাবে তৈরি মাংস বিক্রির অনুমতি দেওয়া দ্বিতীয় দেশ। সিঙ্গাপুর আকারে ছোট হওয়ায় এর খুব একটা বৈশ্বিক প্রভাব পড়েনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ, এর জনসংখ্যা ৩৩ কোটির বেশি। সে হিসেবে ল্যাবে তৈরি মাংস মূলধারার বাজারে প্রবেশে এটি খুব বড় অগ্রগতি। অনেক দেশই এখন যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটতে পারে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আপসাইডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উমা ভ্যালেটি বলেছেন, ‘একটি স্বপ্ন সত্যি হয়েছে; যা নতুন যুগের আগমনকে চিহ্নিত করেছে।’

দুটি কোম্পানিই কৃত্রিম উপায়ে মুরগির মাংস চাষ করবে। ভোগ্যপণ্যের দোকানগুলোয় কম খরচে মাংস পৌঁছানোর স্কেলে উৎপাদনে যাওয়ার আগে ব্যয়বহুল রেস্তোরাঁগুলোয় তাদের মাংস পরিবেশনের পরিকল্পনা করছে।

আপসাইড জানিয়েছে, সানফ্রান্সিসকোর শেফ ডমিনিক ক্রেনের মালিকানাধীন রেস্তোরাঁ বার ক্রেনে তাদের মুরগির মাংস পরিবেশন করবে। গুড মিট জানিয়েছে, তাদের প্রথম ব্যাচের মুরগির মাংস তারা হোসে আন্দ্রেস গ্রুপের কাছে বিক্রি করবে।

কৃত্রিম মাংস তৈরির প্রক্রিয়ায় কোনো প্রাণীকে হত্যা করতে হয় না বা স্থায়ীভাবে তার কোনো ক্ষতি হয় না। কেবল প্রাণীর থেকে টিস্যুর নমুনা কোষ সংগ্রহ করা হয়। পরে একটি সিল করা পাত্রে, যেখানে পুষ্টি ও অন্য উপাদানগুলো যুক্ত করে কৃত্রিম উপায়ে সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। একবার কোষের সংখ্যা বিলিয়ন বা ট্রিলিয়নে বেড়ে গেলে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চর্বিসহ আরও ফ্যাক্টর যোগ করা হয়। পরে প্রচলিত খাবারের মতো প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজিং করা হয়।

আপসাইড ফুডস তার ওয়েবসাইটে এ প্রক্রিয়াটিকে বিয়ার তৈরির অনুরূপ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটার তথ্যানুসারে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ বন উজাড়ের জন্য গরুর মাংসের উৎপাদন দায়ী। একই সঙ্গে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, গবাদি পশুর উৎপাদন থেকেই বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ১৪.৫ শতাংশ তৈরি হয়।

সে হিসেবে ল্যাবে তৈরি কৃত্রিম মাংস পরিবেশের জন্যও কল্যাণকর হতে পারে বলে মনে করেন অনেকেই। কারণ এর উৎপাদনে বন উজাড় করা কিংবা গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কোনো সম্পর্ক নেই।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: