
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে যে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে তার অধিকাংশই নাটকীয়ভাবে বন্ধ করলো ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) বিদেশি সহায়তা চুক্তির ৯০ শতাংশের বেশি বন্ধের কথা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বজুড়ে ৬০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে দেশটি।
ইউএসএআইডি ৬ হাজার ২০০টি দীর্ঘমেয়াদি অনুদান পর্যালোচনা করেছে, যার মূল্য ৫৮.২ বিলিয়ন ডলার। পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইউএসএআইডি ৯০ দিনের মধ্যে ১৫.৯ বিলিয়ন ডলারের ৯ হাজার ১০০টি অনুদানের পর্যালোচনা সম্পন্ন করেছে। পর্যালোচনা শেষে জানা যায়, ইউএসএআইডির প্রায় ৫ হাজার ৮০০টি অনুদান ও চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হচ্ছে।
একইভাবে, পররাষ্ট্র দপ্তর প্রায় ৪ হাজার ১০০টি অনুদান বাতিল করেছে। তবে ৫০০টি ইউএসএআইডি অনুদান এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের ২ হাজার ৭০০টি অনুদান বহাল রাখা হবে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র এক ই-মেইল বিবৃতিতে জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করা অনুদানগুলোসহ ইউএসএআইডির ৫৪ বিলিয়ন ডলারের প্রায় ৫ হাজার ৮০০টি অনুদান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ।
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই সব বিদেশি সহায়তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশে ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ বিশ্বব্যাপী জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার বিতরণ ব্যাহত করেছে। পাশাপাশি ইউএসএআইডির গণহারে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রভাবও পড়েছে। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা কর্মসূচির’ জন্য ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিত্র ইলন মাস্ক ফেডারেল সরকারের আকার কমানোর প্রচেষ্টায় বিদেশি সাহায্যকে প্রায় অন্য যে কোনো লক্ষ্যের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাদের দাবি এই সংস্থার মাধ্যমে মার্কিন অর্থের অপচয় হচ্ছে। এর আগে ইউএসএআইডি-এর প্রায় সব কর্মীকে ছাঁটাই বা প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানায় ট্রাম্প প্রশাসন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সরকারি ব্যয় সংকোচনের জন্য নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত ‘গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বিভাগ’র নেতৃত্বে থাকা ইলন মাস্ক কার্যত ইউএসএআইডি’কে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
মাস্ক ইউএসএআইডি’কে ‘একটি অপরাধী সংগঠন’ এবং ‘আমেরিকাবিরোধী চরম-বাম মার্ক্সবাদীদের বিষাক্ত গোষ্ঠী’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি এবং অন্যান্য ট্রাম্পপন্থি নেতারা দাবি করছেন যে, সংস্থাটি দুর্নীতি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ে জর্জরিত এবং এটি মূল কাজের বাইরে গিয়ে একটি উদারনৈতিক রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
অন্যদিকে ইলন মাস্কের কানাডিয়ান নাগরিকত্ব বাতিলের আবেদনে আড়াই লাখের বেশি মানুষ সই করেছেন। তার বিরুদ্ধে কানাডার সার্বভৌমত্ব নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ইলন মাস্ক একটি বিদেশি সরকারের সদস্য হয়ে উঠেছেন, যারা কানাডার সার্বভৌমত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। ইলন মাস্ক একজন মার্কিন নাগরিক ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন শীর্ষ উপদেষ্টাও।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: