মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিলের পিটিশনে তিন লাখ সই

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:১০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

ধনকুবের ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিল করতে একটি পিটিশনে সই করেছেন তিন লাখেরও বেশি মানুষ। দ্য কানাডিয়ান প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লেখক কোয়ালিয়া রিড এই পিটিশনটি কানাডার হাউস অব কমন্সে উত্থাপন করেন। নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ও মাস্কের সমালোচক চার্লি অ্যাঙ্গাসের অর্থায়নে এই পিটিশনটি হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার হুমকি দিয়ে আসছেন। এতে দেশটির স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। একারণে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্কের জন্মসূত্রে পাওয়া কানাডার নাগরিকত্ব বাতিলের দাবিতে এই পিটিশনে সই করেছেন দেশটির নাগরিকরা।

ট্রাম্পঘনিষ্ঠ মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি টেসলা, স্পেসএক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর প্রধান। মায়ের সূত্রে কানাডার নাগরিক মাস্ক। কানাডার সাসকাচোওয়ান প্রদেশের রাজধানী রেজিনা তার মায়ের জন্মস্থান।

ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মাস্ককে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি দাখিল করা রিডের পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, মাস্ক ‘ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে কানাডার জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত’ হয়েছেন।

ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করেই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কানাডার পণ্যে উচ্চ শুল্কারোপ করেন। এছাড়াও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার হুমকি দেন। এতে কানাডার জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

পিটিশনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া মানে মাস্ক এমন এক ‘বিদেশি সরকারের সদস্য, যারা কানাডার সার্বভৌমত্ব মুছে ফেলতে চায়।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে মাস্কের নাগরিকত্ব অবিলম্বে বাতিল করার এবং তার কানাডীয় পাসপোর্ট প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে পিটিশনে। ট্রাম্প আগেও ট্রুডোকে ব্যঙ্গ করে ‘গভর্নর’ বলেছেন। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রধান নির্বাহীদের গর্ভনর বলা হয়।

গেল জানুয়ারিতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন ট্রুডো, এই ঘোষণার পর মাস্ক এক্সে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য কানাডিয়ান প্রেস জানিয়েছে, সাধারণত এ ধরনের পিটিশনটি স্বীকৃতি পেতে কমপক্ষে ৫০০ স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। তাহলে সেটি হাউস অব কমন্সে উপস্থাপন করা যায় এবং সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

রিডের পিটিশন সহজেই এই শর্ত পূরণ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জানা যায়, বুধবার রাত পর্যন্ত পিটিশনে প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার স্বাক্ষর পড়েছে এবং ক্রমেই স্বাক্ষরের সংখ্যা বাড়ছে। আগামী ২০ জুন পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে।

কানাডার হাইস অব কমন্সের কার্যক্রম আগামী ২৪ মার্চ পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পার্লামেন্টের সদস্যদের ফিরে আসার আগেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: