
সম্প্রতি ফক্স নিউজে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে একে অপরকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ফেডারেল সরকারের দুই মূল নিয়ন্তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। সেখানে ইলন মাস্ক যেমন ট্রাম্পের প্রশংসায় মেতেছেন, তেমনি ট্রাম্পও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির প্রশংসায় কার্পণ্য দেখাননি। এক পর্যায়ে তিনি মাস্ককে তার 'এনফোর্সার ইন চিফ' বা নির্বাহী প্রধান বলে অভিহিত করেন। বুধবার এ বিষয়টি এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সাবেক আবাসন ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রায় এক মাস অতিবাহিত হয়েছে। এই অল্প সময়ে ট্রাম্পের অসংখ্য নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নে তুমুল আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রযুক্তি জগতের দিকপাল ও প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাস্ক।
ফক্স নিউজের সাক্ষাৎকারে একে অপরের প্রশংসার পাশাপাশি ট্রাম্প ও মাস্ক প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে যেকোনো ধরনের উদ্বেগ-শঙ্কা উড়িয়ে দেন।
গত তিন সপ্তাহে ট্রাম্পের অসংখ্য নির্বাহী আদেশের অনেকগুলোর বিরুদ্ধেই আদালতে মামলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় এই আদেশগুলোকে 'অসাংবিধানিক' প্রমাণ করে বাতিলের প্রচেষ্টা চলছে।
২০২৪ সালে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিয়াল প্রচারণা তহবিলের সবচেয়ে বড় দাতা ছিলেন মাস্ক। নির্বাচনে জেতার পর নবগঠিত সরকারি কর্মদক্ষতা দপ্তরের প্রধান হিসেবে মাস্ককে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। ডিওজিই নামে পরিচিত এই দপ্তরের মূল কাজ হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের 'অপচয়, কারচুপি ও অপব্যবহার' নির্মূল করা।
মাস্ক ফক্স নিউজকে বলেন, 'ডিওজিই দপ্তরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের অন্যতম হল প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ যাতে বাস্তবায়ন হয়, সে বিষয়টির দিকে নজর রাখা।'
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, তার নতুন নীতিমালা ও সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে মাস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। উল্লেখ্য, একাধিক সরকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ট্রাম্প 'লড়াই' শুরু করেছেন।
ট্রাম্প বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, 'আপনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে একটি নির্বাহী আদেশে সই দিলেন আর ভাবলেন, কাজ হয়ে গেছে। সেই নির্দেশের কপি সবাইকে পাঠালেন। তারপরও দেখলেন কোনো কাজ হয়নি। আদেশের বাস্তবায়ন হয়নি।'
তিনি জানান, মাস্ক ও ডিওজিই দপ্তর এখন কেন্দ্রীয় সরকারের আমলাতন্ত্রের মাঝে থেকে বাস্তবায়নকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে তার প্রশাসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। ট্রাম্প মন্তব্য করেন, এসব লক্ষ্য পূরণে কেউ বাধা দিলে তারা চাকরি হারানোর আশঙ্কায় পড়বেন।
ট্রাম্প তাকে 'বাস্তবায়নকারী' হিসেবে অভিহিত করার বিষয়টিতে মজা পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন মাস্ক। তিনি বরং নিজেকে একজন 'প্রযুক্তি বিশারদ' হিসেবেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তিনি রসিকতা হিসেবে 'টেক সাপোর্ট' লেখা একটি টিশার্ট পরে এই সাক্ষাৎকারে অংশ নেন।
মাস্ক এমন আচরণ করছেন, যাতে মনে হয় তিনিই প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্প নন—এই সমালোচনা উড়িয়ে দেন মাস্ক। তিনি জানান, তার একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের লক্ষ্যগুলো পূরণে সহায়তা করা।
'দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নির্বাচিত করেছেন। যার অর্থ, তার কাজে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন রয়েছে', বলে আরও উল্লেখ করেন মাস্ক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: