ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা দখলের কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গাজা উপত্যকা দখলের কথা বলে ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করে সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবেন বলে জানিয়েছেন। যদি এমনটি ঘটে তাহলে গত কয়েক দশকের মধ্যে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি রয়েছে তা ভেঙে পড়বে।
তবে ট্রাম্পের এই আকস্মিক পরিকল্পনার পেছনে স্পষ্ট কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা প্রকাশ করেননি তিনি। মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকের পর তারা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। এদিন গাজার প্রতিবেশী দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের প্রস্তাবের পরই এমন কথা জানালেন ট্রাম্প। তিনি গাজা উপত্যকাকে একটি ‘ধ্বংসস্থল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। টানা ১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। যদিও এটি বেশ নড়বড়ে।
ট্রাম্প যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তাহলে তিনি তার মিত্র এবং শত্রু উভয় দলের পক্ষ থেকেই চাপে পড়তে পারেন। গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ ওয়াশিংটন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের নীতির পরিপন্থী হবে। কেননা আন্তর্জাতিকভাবে মনে করা হয় গাজা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হবে যার মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং সেখানে আমরা কিছু কাজ করব। তিনি আরও বলেন, আমরা গাজার মালিক হব এবং উপত্যকাটির আশপাশে থাকা সমস্ত বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করব।
ট্রাম্প যোগ করেন, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা সেই অংশটি (গাজা) দখল করব। সেটির বিকাশ ঘটাব এবং সেখানে হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করব। সেখানে এমন কিছু হবে যার জন্য সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য খুব গর্বিত হতে পারে। গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদী মালিকানার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, আমি সেখানে দীর্ঘমেয়াদী মালিকানা দেখতে পাচ্ছি। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অংশে দুর্দান্ত স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে বলে মনে করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং তারা এতে সমর্থন করেছেন।
গাজায় কারা বসবাস করবে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, সারা বিশ্বের মানুষের আবাসস্থল হতে পারে গাজা। গাজার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তাতে উপত্যকাটির সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা (উপকূলরেখা) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘ সহিংসতার ইতিহাসের পরেও গাজায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাসবাস করছেন। এর মধ্যে কোন অধিকারে যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখলে নেবে তার সরাসরি কোনো উত্তর দেননি ট্রাম্প। তার প্রথম মেয়াদে গাজায় সৈন্য মোতায়েনের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: