সামরিক বাহিনীকে পুনর্গঠন করবে ট্রাম্প প্রশাসন। সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। সিএনএনের প্রতিবেদনে এ খবর বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আদেশে সশস্ত্র বাহিনীতে থাকা ট্রান্সজেন্ডার সেনা সদস্যদের চাকরি নিষিদ্ধ করাসহ সামরিক বাহিনীর বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচি (ডিইআই) বিলুপ্ত করা হবে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ টিকা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য বরখাস্ত হওয়া সেনা সদস্যদের পুনর্বহাল করা হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে ফিরতি ফ্লাইটে এয়ারফোর্স ওয়ানে ওঠার সময় এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রথম প্রকাশিত এই আদেশগুলো গত শনিবার পিট হেগসেথের প্রতিরক্ষাসচিব হিসেবে শপথগ্রহণের সময় এসেছে।
হেগসেথ দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, তিনি সেনাবাহিনীতে বড় ধরনের পরিবর্তন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছেন, যার মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচি ( ডিইআই) অনুশীলন বন্ধ করা এবং সেনাবাহিনীতে কর্মরত কিছু নির্দিষ্ট সদস্যকে নিষিদ্ধ করা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পেন্টাগনে পৌঁছানোর পর হেগসেথ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আরো নির্বাহী আদেশ আসছে, পেন্টাগনের ভেতরে ডিইআই অপসারণ, কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার ইস্যুতে বহিষ্কৃত সেনাদের পুনর্বহাল। আমি একজন জুনিয়র অফিসার হিসেবে এবং এখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এই আদেশগুলো দ্রুত নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার প্রথম মেয়াদের সময় সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ট্রান্সজেন্ডার আমেরিকানদের নিষিদ্ধ করেছিলেন। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালে এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে একটি আদেশ জারি করেছিলেন। এবার ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের জন্য বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া ২০২১ সালের পদক্ষেপ প্রত্যাহার করলেন।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মানসিক এবং শারীরিকভাবে ফিট হতে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের সময় লাগে, তাই সামরিক বাহিনীতে পরিষেবার ক্ষেত্রে তাদের নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
একজন কর্মকর্তা একটি তথ্যপত্র উদ্ধৃত করে বলেন, ‘ট্রানজিশন সার্জারির পর একজন ব্যক্তির চিকিৎসা সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ভারি মাদকদ্রব্যের ব্যবহার। ওই সময়ের মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার সেনা সদস্যরা সামরিক প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে শারীরিকভাবে সক্ষম হন না এবং তাদের চলমান চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন পড়ে। যা সেনা মোতায়েন বা অন্যান্য প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার জন্যও সহায়ক নয়।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনা করে প্রতিরক্ষা দপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে।’
পাম সেন্টার নামে একটি স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মতে, ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে কর্মরত আনুমানিক ১৪ হাজার ট্রান্সজেন্ডার সদস্য ছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিষেধাজ্ঞার কোনো ব্যতিক্রম থাকবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: