হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুতে খুশি পশ্চিম বিশ্ব, বাইডেন বললেন, 'শুভ দিন'

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:০৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে ইসরাইল। যার প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাস নেতার মৃত্যুর দিনকে ‘বিশ্বের জন্য শুভ দিন’ হিসেবেও উল্লেখ্য করেছেন বাইডেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, ইয়াহিয়া নিহতের ফলে গাজা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তির একটি মূল বাধা এখন সরে গেছে।

এদিকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস হামাস প্রধানের মৃত্যু নিয়ে বলেছেন, ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের হামলার মাস্টারমাইন্ডকে ইসরাইলের এ হত্যা ‘অবশেষে গাজা যুদ্ধের অবসান’ করার একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এর অবসান হওয়া উচিত যাতে ইসরাইল নিরাপদ থাকে, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়, গাজার দুর্ভোগ শেষ হয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার উপলব্ধি করতে পারে।’

এ ব্যাপারে এক লিখিত বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘এটি ইসরাইলের জন্য, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এবং বিশ্বের জন্য একটি ভাল দিন।’ সেই সঙ্গে বাইডেন জানান, তিনি খুব শীঘ্রই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একটি অভিনন্দন বার্তা পাঠাবেন। এবং জিম্মিদের মুক্তি ও এই যুদ্ধ একেবারে শেষ করার জন্য উপযুক্ত পথ নিয়ে আলোচনা করবেন।

বাইডেন আরও বলেন, ‘গাজায় হামাসকে ক্ষমতায় না রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে। একটি রাজনৈতিক মীমাংসার মাধ্যমে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ভাল ভবিষ্যৎ প্রদান করা যাবে। কেননা, ইয়াহিয়া সিনওয়ার এতদিন সেই সব লক্ষ্য অর্জনের পথে এক অপ্রতিরোধ্য বাধা ছিল। সেই বাধা আর নেই। কিন্তু আমাদের সামনে অনেক কাজ বাকি আছে।’

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সিনওয়ারকে শান্তির পথে একটি 'গুরুত্বপূর্ণ বাধা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে 'যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার ফলে এগিয়ে যাওয়ার, বন্দীদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।'

হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত ছিল না বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি এয়ার ফোর্স মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি ছিল পুরোপুরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান। যুক্তরাষ্ট্র এখানে সরাসরি জড়িত ছিল না।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচে আদ্রি গাজা উপত্যকায় সিনওয়ারকে হত্যার ঘোষণা দেওয়ার পর পেন্টাগনের কাছ থেকে এ মন্তব্য এলো।

১ অক্টোবর, বুধবার হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হন। গাজার রাফায় প্রাণ হারান তিনি, তবে ইসরায়েলি সেনারা জানত না তারা সিনওয়ারকে হত্যা করেছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, বুধবার গাজার রাফার একটি ভবনে হামাসের কয়েকজন যোদ্ধাকে প্রবেশ করতে দেখে ইসরায়েলি সেনারা। এরপর সেখানে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর সেনারা সেখানে যাওয়ার পর সিনওয়ারের মতো দেখতে এক যোদ্ধাসহ মোট তিনজনের মরদেহ পায় তারা। এরপর বৃহস্পতিবার নিশ্চিত হওয়া গেছে ওই মরদেহটি সিনওয়ারেরই ছিল।

হামাসের দুটি সূত্র সৌদির সংবাদমাধ্যম আশরাক আল-আসওয়াতকে সিনওয়ারের মৃত্যুর তথ্যটি নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, গাজার ভেতর এবং বাইরে থাকা নেতাদের সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছেন, সিনওয়ারের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কয়েকদিন আগে সবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে গাজায় পলিটিক্যাল প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতে, গত ৭ অক্টোবরের হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা মূল পরিকল্পনাকারী তিনিই ছিলেন।

তবে ইয়াহিয়া সিনওয়ার হামলায় নিহত হয়েছেন বলে ইসরাইল যে দাবি করেছে- তা নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি হামাস।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: