ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়তে চলেছে ভয়াবহ হ্যারিকেন মিল্টন। এটাকে এই মুহূর্তে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার মহাশক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হিসেবে ধরা পড়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার এটি ফ্লোরিডার উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে স্থলভাগে পৌঁছানোর আগে কিছুটা দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি-৩ মাত্রায় নেমে এলেও এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা থাকবে ভয়াবহ।
খবর অনুসারে, ফ্লোরিডার টাম্পা শহরের কাছে মিল্টনের আঘাত হানার সম্ভাবনা প্রবল। এই মেট্রোপলিটন অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। তাই ঝড়টি আঘাত হানলে ব্যাপক জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ঝড় হিসেবে ধরা হচ্ছে মিল্টনকে।
এনএইচসি (ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টার) সতর্ক করেছে, হ্যারিকেন মিল্টন থেকে ১০-১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস, দেড় ফুট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বাতাসের আঘাতের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন, এই ধরনের শক্তিশালী ঝড় থেকে ফ্লোরিডার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জীবন-হুমকি এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হবে।
তীব্র ঝড়-বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জনগণকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলেছে এবং বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
মিল্টনের শক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টারের একটি দল ঝড়ের মধ্য দিয়ে বিমান চালিয়ে প্রবেশ করেছে। এই ‘হ্যারিকেন হান্টার’দের ঝুঁকিপূর্ণ মিশনে প্রবল ঝড়ের কারণে তাদের বিমান ভয়াবহভাবে ঝাঁকুনি খায়, এমনকি মনে হচ্ছিল বিমানটি আকাশ থেকে পড়ে যাবে। তবে দলটি সফলভাবে ঝড়ের কেন্দ্রে পৌঁছে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে আটলান্টিকে সৃষ্ট অন্যতম শক্তিশালী ঝড় হতে চলেছে মিল্টন। এর আগে, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি শক্তিশালী হ্যারিকেন হেলেন ব্যাপক ক্ষতি করেছে। মিল্টনের সম্ভাব্য আঘাতে আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডার স্থানীয় প্রশাসন এরই মধ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং জনসাধারণকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছে। বিশেষত উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের জানানো হয়েছে, ঝড়ের আগে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: