ইরানের সঙ্গে গোপন আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও আরব রাষ্ট্রগুলো

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৯ অক্টোবর ২০২৪ ০৪:৩৯

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের সব ফ্রন্টে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে গোপনে ইরানের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্বের দেশগুলো। ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল-১২-এর বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সরাসরি এই আলোচনায় যুক্ত নয়। তবে ইসরায়েলকে এই আলোচনার বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার পরও ইসরায়েলের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা এবং হামাসের আরোপিত শর্তের বিষয়ে অনড় অবস্থানের কারণে এখানকার অবস্থা অন্যান্য রণাঙ্গনের তুলনায় আলাদা।

চ্যানেল-১২-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব ফ্রন্টে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের অবস্থান কী, তা এখনো যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়নি। তবে লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার বিষয়ে এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘আমরা বর্তমানে নির্ধারক অবস্থানে আছি, লিতানির (নদী) ওপার পর্যন্ত (হিজবুল্লাহ) সরে যাওয়া এবং সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় হিজবুল্লাহর সব সামরিক অবস্থান ভেঙে ফেলাসহ আমাদের শর্তে একটি যুদ্ধবিরতি হবে।’

বিষয়টি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন হিজবুল্লাহ লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পূর্বশর্ত হিসেবে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার অবস্থান পরিত্যাগ করেছে। তবে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা তাদের শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকবে।

এর আগে, সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাবে না ইসরায়েল। বরং ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সামরিক ঘাঁটি ও গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেতে আগ্রহী। বাইডেন ও অন্যান্য শীর্ষ আমেরিকান কর্মকর্তারা বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা খুব বেশি কার্যকর হবে না এবং তা এই অঞ্চলকে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে ডুবিয়ে দেবে।

প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয়েছে, ইরান যদি ইসরায়েলে আরও হামলা চালায়, তবে ইসরায়েল দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায়ও হামলা করতে পারে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ইরান এরই মধ্যে এ বছর দুবার সরাসরি ইসরায়েলে আক্রমণ করেছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও জানিয়েছে, পেন্টাগনের কর্মকর্তারা ভাবছেন—ইসরায়েল একাই ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে কি না। প্রতিবেদনে ইসরায়েলের সাবেক ও বর্তমান জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাো সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েল আসলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি করতে পারবে না হয়তো।

এর আগে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি মাসের শুরুতে ইরানের হামলার পর ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেন, ইরানের হামলার জবাবে ইহুদি রাষ্ট্রটির প্রতিক্রিয়া ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’ হওয়া উচিত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তকে বলেন, ইসরায়েলের এমন সব পদক্ষেপ এড়ানো উচিত, যার ফলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়তে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: