জিনের কার্যকলাপ কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেই রহস্য উন্মোচনের জন্য দুই আমেরিকান বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকান চলতি বছরের চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন। 'মাইক্রোআরএনএ' নামক এক ধরনের অণু আবিষ্কার এবং জিন নিয়ন্ত্রণে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উন্মোচনই তাদের এই সাফল্য এনে দিয়েছে।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, কয়েক দশক ধরে জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা চলছে। জিন নিয়ন্ত্রণে গোলযোগ দেখা দিলে ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং অটোইমিউনিটি রোগের মতো গুরুতর রোগ হতে পারে।
‘তাদের যুগান্তকারী আবিষ্কার জিন নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ নতুন একটি নীতি উন্মোচন করেছে, যা মানুষসহ বহুকোষী জীবের জন্য অপরিহার্য,’ নোবেল কমিটির বক্তব্য।
পৃথকভাবে কাজ করলেও পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করে এই দুই বিজ্ঞানী ‘সি. এলিগ্যান্স’ নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র কৃমি (প্রায় ১ মিলিমিটার লম্বা) নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। তারা কোষের মধ্যে কখন এবং কীভাবে মিউটেশন (জিনগত পরিবর্তন) ঘটে তা বের করার চেষ্টা করেছেন।
১৯৯৩ সালে প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রে তারা তাদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। তারা দেখান কীভাবে জিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিটি কোষকে কেবল প্রাসঙ্গিক নির্দেশাবলী নির্বাচন করতে সাহায্য করে।
৭০ বছর বয়সী অ্যামব্রোস ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল স্কুলের এবং ৭২ বছর বয়সী রুভকান হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক।
নোবেল পুরষ্কারের অংশ হিসেবে তারা একটি ডিপ্লোমা, একটি স্বর্ণপদক এবং ১০ লক্ষ ডলার পাবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর, নোবেল পুরষ্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোমে এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাফ তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।
উল্লেখ্য, গত বছর কোভিড-১৯ টিকা তৈরির পথ প্রশস্ত করে দেওয়া ‘মেসেঞ্জার আরএনএ’ (এমআরএনএ) প্রযুক্তির উন্নয়নে অবদানের জন্য ক্যাটালিন কারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞান, বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য এবং শুক্রবার শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার ঘোষণা করা হবে। অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার আগামী ১৪ অক্টোবর, সোমবার ঘোষণার মাধ্যমে এ বছরের নোবেল মরসুমের সমাপ্তি ঘটবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: