ফ্রান্সের লে বুর্জে বিমানবন্দর থেকে টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও পাভেল দুরভকে গ্রেপ্তার করেছে ফরাসি পুলিশ। দুরভের গ্রেপ্তারের খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন টেসলা ও এক্স-এর সিইও ইলন মাস্ক, যিনি এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন।
ইলন নিজেও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কন্টেন্ট মডারেশনকে সীমিত করে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছেন, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট, যেমন বিদ্বেষমূলক, বিতর্কিত এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। ইলনের মতে, মডারেশন হলো সেন্সরশিপের আরেকটি রূপ।
দুরভের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায়, ইলন মাস্ক ফরাসি পুলিশের পদক্ষেপের সমালোচনা করে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্ট করেছেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুরভের বিরুদ্ধে ওঠা মডারেশন ও অবৈধ কার্যক্রমের অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছেন।
টুইটারের নতুন এ মালিক একাধিক পোস্টে ফ্রান্সের পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার লঙ্ঘন হিসেবে সমালোচনা করেছেন।
তিনি এক পোস্টে লিখেন, 'স্বাধীনতা, স্বাধীনতা! স্বাধীনতা?' এবং অন্য একটি পোস্টে বলেন, 'বিপজ্জনক সময়'। দুরভের সমর্থনে মাস্ক '#ফ্রিপাভেল' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তার মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন।
২৫ আগস্ট, রোববার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ইলন লেখেন, "মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থনে আপনার পরিচিতদের কাছে এক্স পোস্টগুলো ফরওয়ার্ড করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে সেন্সরশিপ-মুখী দেশগুলোতে"।
এদিকে, ফরাসি পুলিশ জানিয়েছে, দুরভের বিরুদ্ধে প্রতারণা, মাদক পাচার এবং সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রমের অভিযোগে তদন্ত চলছে। ইউরোপের কিছু দেশ অভিযোগ করেছে যে টেলিগ্রাম অপরাধমূলক কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
দুরভ রাশিয়ার সামাজিক মাধ্যম 'ভিকোনটাক্টে'র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, কিন্তু ব্যবহারকারীদের তথ্য রুশ সরকারের কাছে দিতে অস্বীকার করার পর তিনি রাশিয়া থেকে পালিয়ে যান।
টেলিগ্রামে তিনি বারবার ইউক্রেন ও গাজার সংঘর্ষ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বারা সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচিত গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে অস্বীকার করেছেন।
২০১৬ সালে সিএনএন-এ দুরভ বলেছিলেন, মেসেজিং প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা যায় না যে এটি শুধু সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ থাকবে, কিন্তু সন্ত্রাসী বা অপরাধীদের নজরদারি করতে কর্তৃপক্ষকে সুযোগ দেবে। প্রযুক্তি হয় সবার জন্য নিরাপদ হতে হবে, নয়তো একেবারেই নিরাপদ হবে না।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক নিজেকে 'মুক্ত মতপ্রকাশের সমর্থক' হিসেবে দাবি করলেও, তার বিরুদ্ধে সমালোচকদের নীরব করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি তার বিরোধিতা করা কর্মচারীদের বরখাস্ত করেছেন এবং তার সমালোচনাকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোকে নিষিদ্ধ করেছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: