বিশ্বমানচিত্র থেকে ইরানকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার হুংকার দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এ হুংকার দেন। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা ওই পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হত্যা করে- যা সব সময়ই একটা সম্ভাবনা। আর এমনটা ঘটলে আমি আশা করব, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। যদি তা না হয়, তাহলে আমেরিকান নেতাদের নির্বোধ কাপুরুষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।’
এর আগে বুধবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া এক ভাষণে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইরানি চক্রান্ত তুলে ধরেন। এর পরই ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ওই পোস্ট করেন। ট্রাম্প এর আগেও প্রেসিডেন্ট থাকাকালে একাধিকবার ইরানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হুমকি দিয়েছেন।
গণমাধ্যমগুলোর সূত্রে জান যায়, আমেরিকান গোয়েন্দারা কয়েক সপ্তাহ আগে ট্রাম্পকে হত্যার জন্য ইরানি ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারে। এরপর থেকে আমেরিকান সিক্রেট সার্ভিস ট্রাম্পের নিরাপত্তা জোরদার করে। তবে সম্প্রতি ট্রাম্পের ওপর হামলার সঙ্গে তেহরান যুক্ত নয় বলে দাবি জানিয়ে আসছে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্টকে নিয়ে তেহরানের পরিকল্পনা জানার পর ট্রাম্পের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও একই ধরনের কথা বলেছে।
তবে প্রতিবেদনে এও বলা হয় যে, তেহরানের পরিকল্পনার সঙ্গে ১৩ জুলাইয়ের যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় এক প্রচার সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর হামলা কোনো মিল নেই।
ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলে আসা দীর্ঘদিনেরে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে ২০২০ সালে। এ সময় আমেরিকান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির মৃত্যু হয়। তেহরান তখন এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। যে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, তারা বেশ কয়েক বছর ধরে ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইরানি হুমকির ওপর নজর রাখছে।
এদিকে ট্রাম্পের দেওয়া সর্বশেষ পোস্টটি তার করা ২০১৯ সালের এক বিতর্কিত মন্তব্যের কথাও মনে করিয়ে দেয়। যখন প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ইরান আমেরিকার কোনো কিছুর ওপর আক্রমণ করলে দেশটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।’
ইরানের প্রতি আমেরিকান প্রশাসনের নতুন দফা নিষেধাজ্ঞার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনীতির পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে বলে ইরানের কর্মকর্তারা মন্তব্য করার প্রেক্ষিতেই ট্রাম্প অমন হুমকি দেন।
এছাড়াও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে উত্তর কোরিয়াকে ‘আগুন এবং ক্রোধের’ সঙ্গে তুলনা করেন, যা বিশ্ব কখনও দেখেনি বলেও হুমকি দিয়েছিলেন। যদিও ট্রাম্প পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন এবং প্রায়শই তাদের বন্ধুত্বের উদাহরণ দিয়ে থাকেন।
সূত্র: আল-আরাবিয়া
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: