পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য একটি আঞ্চলিক সফরের শুরুতে ১০ জুন, সোমবার মিসরে পৌঁছেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করতে সোমবার জেরুজালেমে যাওয়ার আগে ব্লিনকেন কায়রোতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতেহ আল-সিসির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মিসর প্রথম আরবরাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৯ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। মিসর দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে।
সিসি ও ব্লিনকেন মিসর ও গাজার মধ্যে অবস্থিত রাফা সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় চালুর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রসিংটি অবরুদ্ধ অঞ্চলে সহায়তা প্রবেশের মূল জায়গা। ইসরায়েলি সেনারা এর ফিলিস্তিনি পাশ দখল করার পর থেকে এক মাস ধরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গত অক্টোবরের শুরুতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই অঞ্চলে শীর্ষ কূটনীতিকের অষ্টম সফর এটি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ৩১ মে ঘোষিত একটি প্রস্তাবের সমর্থন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি সফর করছেন। প্রধান মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার যুদ্ধবিরতির জন্য কয়েক মাস ধরে আলোচনায় নিযুক্ত রয়েছে।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এখন পর্যন্ত শুধু নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি পালিত হয়েছে।
সেই সময় প্রায় ১০০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এদের বেশির ভাগই ইসরায়েলের কারাগারে বদি ২৪০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছে।
সর্বশেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং হামাস প্রাথমিক ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধ থামিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করবে। পাশাপাশি আলোচনাকারীরা শত্রুতার স্থায়ী অবসানের জন্য যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে। হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিকল্পনায় সাড়া দেয়নি।
সেই সঙ্গে ইসরায়েলের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি এ আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলে থাকাকালীন ব্লিনকেন মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ বেনি গ্যান্টজের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যিনি রবিবার নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। এরপর আরো আলোচনার জন্য ব্লিনকেন জর্দান ও কাতারে যাবেন।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সেই হামলায় এক হাজার ১৯৪ জন নিহত হয়। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। দুই পক্ষের নিহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: