গাজা গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান বিক্ষোভ দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এসব বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'বহিষ্কার' করার পাশাপাশি দেশ থেকে বের করে দেবেন। ২৭ মে, সোমবার ইহুদি দাতাদের একটি দলের সাথে কথা বলার সময় এসব কথা বলেন ট্রাম্প। খবর ইরানভিত্তিক প্রেসটিভির।
ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভকারীদের নির্বাসিত করার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, আমি একটা কাজ করি, শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে আমি তাদের দেশ থেকে বের করে দিই। আপনি জানেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর বিদেশি ছাত্র আছে। তারা এটি শোনার সাথে সাথে তাদের আচরণ পরিবর্তন করবে।
৭৭ বছর বয়সী এ রিপাবলিকান প্রার্থী ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভকে 'মৌলবাদী বিপ্লব' আখ্যা দিয়ে বলেন, আপনারা যদি আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করেন, আমরা এসব আন্দোলনকে ২৫ বা ৩০ বছর পিছিয়ে দেবো। এসময় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরাইলবিরোধী বলে উপহাস করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প তার দাতাদের বলেছেন, তিনি ইসরাইলের চলমান গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার অধিকারকে সমর্থন করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নাড়িয়ে দিয়েছে। লাখ লাখ শিক্ষার্থী গাজা গণহত্যার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছে। তারা তাঁবু টানিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরে অবস্থান করছে। এরইমধ্যে পুলিশ ও জায়নবাদীদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন তারা। তবে তারপরও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছে, যে কোনো মূল্যে ইসরাইলকে গাজা গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে এ গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইসরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে, সে অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে।
এর আগে গেলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল।
গাজা ভূখণ্ডে দখলদার বাহিনীর বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৮০ হাজার মানুষ। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার গাজাবাসী।
এ গণহত্যা বন্ধের আহবান জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলি আক্রমণের ফলে গাজার জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজার ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, গাজার ২২ লাখ অধিবাসী দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে বিশ্বকে জবাবদিহি করতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: