নাসা শেয়ার করেছে পৃথিবীর এয়ারগ্লোর ছবি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৭

এয়ারগ্লোর এই ছবিটাই তুলেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন : সংগৃহীত ছবি এয়ারগ্লোর এই ছবিটাই তুলেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন : সংগৃহীত ছবি


সম্প্রতি নাসা পৃথিবীর এয়ারগ্লোর অদ্ভুত সুন্দর  কিছু ছবি ইন্সট্রাগ্রামে শেয়ার করেছে। ছবিটি তোলা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে। ছবিটিতে দেখা যায়, রাতের কালো আকাশও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, দিগন্তের ওপরে জ্বল জ্বল চাঁদ ও তারাদের দল। একনজর দেখেই এই ছবির প্রেমে মজেছেন সোন্দর্য পিপাসুরা।

রাতের আকাশের এই উজ্জ্বলতার কারণ কিন্তু শহরের কৃত্রিম আলো নয়। এমনকী চাঁদের আলোও এই উজ্জ্বলতার উৎস নয়।
তাহলে কীভাবে বায়ুমণ্ডল উজ্জ্বল হয়ে এই এয়ারগ্লো তৈরি করে?

নাসা জানায়, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপররের স্তরের অণু-পরমাণুগুলি সূর্যের আলো শোষণ করে উত্তেজিত হয়। তবে উত্তেজিত হওয়া এসব-অণুপরমাণুগুলি সেই উত্তেজনা ধরে রাখতে পারে না।

এটাই নিয়ম, অণুপরমাণুগুলি সবসময় একটা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় থাকে বা থাকতে চায়। তাই উত্তেজনা কমাতেই অণু-পরামাণুগুলি আবার সেসব আলো বিকিরণ করে দেয়। কিন্তু দিনের বেলা সূর্যের আলো অবিরাম তাদেরকে আঘাত করে। তাই উত্তেজনা প্রশমন করে বেশিক্ষণ ভারসাম্য অবস্থায় থাকতে পারে না।

মুহূতের্র মধ্যেই আবার আলোক রশ্মির প্রভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতেই থাকে বলে দিনের বেলা এরা ভারসাম্য অবস্থায় আসার ফুসরৎ পায় না। কিন্তু সূর্য অস্ত গেলে সেই সুযোগটা পায়। তখন উত্তেজিত অণু-পরমাণুগুলি আলো বিকিরণ করে। বিকিরিত সেই আলোতেই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তর। এই ব্যাপারটাকেই এয়ার গ্লো বলে।

ঠিক এমন একটা এয়ারগ্লোর ছবি গত ১৪ নভেম্বর তোলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের বিজ্ঞানীরা। ছবিটি গত ১৮ নভেম্বর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের ইনস্টাগ্রাম পেজে শেয়ার করে। নাসা লিখেছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন দক্ষিণ-মধ্য যুক্তরাষ্ট্র অতিক্রম করার সময় এই ছবিটি তোলে। মহাকাশ স্টেশন এ সময় ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪১৮ কিলোমিটার ওপরে অবস্থান করছিল।

ছবিটিতে শিকাগো শহরের রাতের আকাশ ধরা পড়েছে। একই সঙ্গে চাঁদ ও অন্যান্য তারকাপঞ্জিও রয়েছে দিগন্ত রেখার কাছাকাছি।

এয়ারগ্লোকে অনেকে অরোরা বা মেরুজ্যোতির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। কিছু পার্থক্য এদের মধ্যে রয়েছে। মেরুজ্যোতি তৈরি হয় সৌর ঝড়ের ফলে সূর্য থেকে আসা কণার কারণে। এসব কণা পৃথিবীর চুম্কক্ষেত্রের প্রভাবে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেই উজ্জ্বলতা শুধু মেরু অঞ্চলেই দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে এয়ার গ্লো তৈরি হয় বায়ুমণ্ডলের নিজস্ব কণারা উত্তেজিত হয়ে। পৃথিবীর যেকোনো স্থানে এয়ারগ্লো দেখা যেতে পারে।

দুদিনেই এই ছবিতে ৮ লাখ মানুষের রিঅ্যাকশন পড়েছে। মন্তব্যের ঘরেও প্রচুর মানুষ তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।


সূত্র: নাসা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: