গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়া এবং এতে সহযোগিতার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দুই মন্ত্রীসহ প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার ফেডারেল আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় বাইডেন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নিউইয়র্কভিত্তিক সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর) গাজার বাসিন্দাদের পক্ষে এবং সেখানে বসবাস করা মার্কিন নাগরিকদের স্বজনদের পক্ষে মামলাটি করেছে।
এক মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচারে হামলা পরিচালনা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই সংঘাত পরিচালনায় মার্কিন সরকারের কাছ থেকে অর্থ ও অস্ত্রসহায়তা পাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির হামলায় এরই মধ্যে গাজায় ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
মামলায় অভিযোগের শুরুতে সিসিআর লিখেছে, ‘ইসরায়েল সরকারের অনেক নেতা গাজায় গণহত্যা চালানোর স্পষ্ট অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের জন্তু-জানোয়ারের মতো অমানবিক বৈশিষ্ট্যে আখ্যায়িত করেছেন।’
সিসিআর দাবি করেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এমন মনোভাব এবং হত্যাযজ্ঞ গণহত্যার একটি প্রকাশ্য অপরাধের প্রমাণ বহন করছে।
সিসিআর বলছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নজিরবিহীন বোমা হামলা শুরু করার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন দেশটির প্রতি অটল সমর্থন ব্যক্ত করেন। চলমান সংঘাতের মধ্যে এই সমর্থনের বিষয়টি প্রায় সময়ই উচ্চারণ করেছেন বাইডেনসহ তাঁর মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। শুধু তা-ই নয়, বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহত হলেও ইসরায়েলকে সামরিক, আর্থিক এবং রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছে বাইডেন প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গোষ্ঠী গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের জন্য দাবি জানিয়ে এলেও বাইডেন প্রশাসন সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই করেনি। উপরন্তু ইসরায়েল সরকারকে কূটনৈতিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
সিসিআরের আইনজীবী আস্থা শর্মা পোখারেল আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন ও ফেডারেল আইনের অধীনে এই গণহত্যা প্রতিরোধ এবং এই গণহত্যাকে সমর্থন বন্ধ করার জন্য তাঁদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পদক্ষেপে, প্রতিটি সুযোগে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁরা ইসরায়েলকে সহযোগিতা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা ইসরায়েলে আরও অর্থ ও অস্ত্র পাঠাতে চান।’
মামলার বাদীদের অন্যতম মার্কিন নাগরিক লাইলা আল-হাদ্দাদ চলমান সংঘাতে গাজায় বসবাস করা অন্তত পাঁচ স্বজনকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার দেওয়া করের অর্থ আমার ফুফু ও ফুফাতো ভাইদের হত্যা করার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
এই মামলায় ইসরায়েলকে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা বন্ধ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: