আমেরিকান ইতিহাসে প্রথমবার হাউস স্পিকার অপসারিত

মুনা নিউজ ডেস্ক | ৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০৫

অনাস্থা ভোটে পদ হারিয়েছেন স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি : সংগৃহীত ছবি অনাস্থা ভোটে পদ হারিয়েছেন স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি : সংগৃহীত ছবি


আমেরিকান কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে পদ হারিয়েছেন স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি। ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার রাতে ২১৬-২১০ ভোটে তিনি অপসারিত হন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভোটের মাধ্যমে কোনো স্পিকার পদচ্যুত হলেন। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি।

মূলত নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অন্তঃদ্বন্দ্বের জেরেই ম্যাককার্থিকে সরে যেতে হলো। এতে সঙ্গী হয়েছে ডেমোক্রেটরা। তার বিরুদ্ধে যে ২১৬ জন ভোট দিয়েছেন, তাদের ২০৮ জন ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের, বাকি আটজন ছিলেন তার নিজের দলের।

নিজ দলের বিরোধিতার বিষয়ে রিপাবলিকান নেতা ম্যাট মেটজ বলেন, মাত্র আটজন চাইলে এই হাউসের স্পিকারকে সরিয়ে দিতে পারে। আমাদের সাংবিধানিক সমস্যা রয়েছে। এর সমাধান জরুরি।

এ বছরের জানুয়ারিতে ম্যাককার্থি প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ততটা মসৃণ ছিল না। রিপাবলিকান পার্টির অনেকেই তাকে স্পিকার হিসেবে চাচ্ছিলেন না। তারপরও শেষ মুহূর্তে গিয়ে তিনি স্পিকার নিযুক্ত হয়েছিলেন।

ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত ডানপন্থী রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ম্যাট গেটজ মঙ্গলবার ম্যাককার্থিকে পদচ্যুত করার প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। ম্যাককার্থিবিরোধী হিসেবে পরিচিত এই আইনপ্রণেতা অভিযোগ করেন, ম্যাককার্থি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমাতে যতটা করা উচিত, ততটা করছেন না তিনি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, তিনি বিদায় না নিলে আমি বিদায় নেব। আর ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে তার বিরোধিতা তো ছিলই।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং শাটডাউন এড়াতে একেবারে শেষ মুহূর্তে তহবিল বিল পাসের পর থেকে বেশ আলোচনায় ছিলেন কেভিন ম্যাককার্থি। গত শনিবার প্রতিনিধি পরিষদে স্টপগ্যাপ তহবিল বিলটি পাস হয়। পরে ওইদিনই সিনেটে বিলটি পাস হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাতে সই দিলে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বিল আগামী দেড় মাসের জন্য সরকারি অর্থায়ন বজায় থাকার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে তাতে ইউক্রেনের জন্য নতুন কোনো সহায়তা ফান্ড রাখা হয়নি।

এদিকে স্পিকারবিহীন অবস্থায় প্রতিনিধি পরিষদ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ব্যয়সহ বিভিন্ন বিল পাস আটকে গিয়ে প্রশাসনে অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দ্রুত একজন স্পিকার নিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, আমাদের জাতির জরুরি প্রয়োজনে দেরি করতে প্রস্তুত নই। ফলে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য রিপাবলিকান দলের আরেক আইনপ্রণেতা প্যাট্রিক ম্যাকহেনরিকে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


সূত্র : আল জাজিরা ও বিবিসি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: