যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে ২ দশমিক ১ শতাংশে থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে সরকার। দ্বিতীয় প্রান্তিকেও (এপ্রিল-জুন) যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধির হার একই ছিল। তখন প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ছিল ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি, ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং কেন্দ্র ও স্থানীয় সরকারের ব্যয়। খবর এপি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকবার সুদহার বাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নেয়া হয়েছে। ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, ক্রমবর্ধমান ঋণের ব্যয় আগামীতে মন্দা ভাব তৈরি করতে পারে।
উচ্চ সুদহারের প্রভাব এর মধ্যেই দৃশ্যমান। ভোক্তা ব্যয় এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে। অন্যদিকে, আবাসন খাত ব্যতীত অন্যান্য খাতে ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। রাজ্য ও স্থানীয় সরকারের ব্যয় ও বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনই এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ নিয়ে সরকারের চূড়ান্ত প্রতিবেদন। পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ঘটবে। মূলত ভোক্তাদের ব্যয় বেড়ে যাওয়াই ভূমিকা রাখবে প্রবৃদ্ধির পেছনে। এ সময়ে বিনিয়োগও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস, তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি প্রায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ বার্ষিক হারে সম্প্রসারণ হতে পারে। সেটি হবে এক বছরের মধ্যে দ্রুততম প্রবৃদ্ধি। এদিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আটলান্টার মতে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে আশঙ্কা রয়েছে প্রবৃদ্ধির এ ইতিবাচক ধারা দীর্ঘমেয়াদি না-ও হতে পারে। কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে বছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থনীতি দুর্বল হতে পারে। অর্থনীতিবিদরা আরো পূর্বাভাস করেছেন মহামারী চলাকালীন আমেরিকানদের সঞ্চয় আগামী প্রান্তিকে আরো কমে আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগামীতে কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে পারে, যা চলমান প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, শিক্ষার্থীদের পুনরায় ঋণ প্রদান শুরু করা, ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্সের ধর্মঘটের প্রভাব এবং সপ্তাহান্তে সম্ভাব্য সরকারি শাট ডাউন।
নানা কারণেই আমেরিকানদের ব্যয় করার ক্ষমতা কমতে পারে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল হতে পারে।
অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হাই ফ্রিকোয়েন্সি ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ রুবিলা ফারুকি বলেন, ‘বর্তমানে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। চলতি প্রান্তিকে তা আরো ত্বরান্বিত হবে। তবে বছরের শেষ তিন মাসে প্রবৃদ্ধির গতি উল্লেখযোগ্য হারে কমবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’
সূত্র : এপি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: