গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতি মাসেই দেশটির কোনো না কোনো অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলার খবর পাওয়া যায়। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে একটি দপ্তর খোলার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর দপ্তরটির প্রধান হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার গত কয়েক বছরে হওয়া বন্দুক হামলায় নিহতদের স্মরণে হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
সেখানে বাইডেন বলেন, ঝড়ের মতো বাড়তে থাকা বন্দুক সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্র অস্থির হয়ে উঠেছে। এ সংকট নিয়ন্ত্রণে আমার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। এ প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় খুব দ্রুত একটি নতুন দপ্তর খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, যেটির কাজ হবে, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা এ দপ্তরের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন।’
এ বিষয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, আমাদের হাতে নষ্ট করার মতো সময় আর আমাদের নেই। এভাবে মানুষের জীবন নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। স্বাধীনতার সঙ্গে জনগণের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি সরাসরি সম্পর্কিত, আমরা এখন জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করবো।
ইউএসএ টুডে ও নর্থ-ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত ডাটাবেইজের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বন্দুক সহিংসতার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ৩৫টি বড় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বন্দুক সহিংসতার দেশটিতে গত ৯ মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৭১ জন।
তবে নতুন দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বন্দুক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে কতখানি কাজে আসবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেক আমেরিকান রাজনীতি বিশ্লেষক। কারণ, বন্দুক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক ধাপ হলো আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বন্দুক বা অস্ত্র কেনা-বেচা নিয়ন্ত্রণ করা।
বাইডেন প্রশাসন এর আগে কয়েকবার বন্দুকের সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই তার এ সিদ্ধান্ত আমেরিকান কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনেটিটিভস ও উচ্চকক্ষ সিনেটের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের বিরোধের শিকার হয়েছে।
বর্তমানে এটি আরও কঠিন, কারণ গত বছর কংগ্রেসের নির্বাচনে নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে রিপাবলিকান পার্টি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: