গভীর আইনি জটিলতায় ট্রাম্প

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৭ আগস্ট ২০২৩ ১৩:২৯

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

 

যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনে এবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে পরাজয়ের ফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার অঙ্গরাজ্যটির একটি গ্র্যান্ড জুরি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪১টি অভিযোগ আনেন। এর মাধ্যমে চলতি বছর ট্রাম্প চতুর্থবারের মতো ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলেন। তবে তিনি সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।


এ নিয়ে চারটি পৃথক মামলায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের সংখ্যা ৯১টিতে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে গভীর আইনি জটিলতায় পড়ছেন ট্রাম্প। যদিও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। নতুন অভিযোগের কারণে ট্রাম্পসহ ১৯ জনকেই ২৫ আগস্ট দুপুরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, অন্য কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগের মধ্যে পড়লে অনেক আগেই ক্যারিয়ার গুটিয়ে নিতেন। তবে ক্ষিপ্ত ট্রাম্প লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। জর্জিয়ার অভিযোগ নিয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফাল্টন কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ফ্যানি উইলস সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন।

তবে ট্রাম্প বলেছেন, ডেমোক্র্যাট ফ্যানি উইলস তাঁর বিরুদ্ধে যে তদন্ত চালিয়েছেন, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ৯৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ট্রাম্প ও তাঁর ১৮ সহযোগীর বিরুদ্ধে আনা ৪১টি ফৌজদারি অভিযোগের মধ্যে স্থানীয় কর্মকর্তাদের চাপ দেওয়ার একটি কথিত ষড়যন্ত্র, রাজ্য আইনসভার কাছে নির্বাচনী জালিয়াতির বিষয়ে মিথ্যা বিবৃতি, নির্বাচনী কর্মীদের হয়রানির মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ট্রাম্পের হার মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন এবং জেনেশুনে ও ইচ্ছাকৃতভাবে ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছিলেন। জর্জিয়ার মামলাটি তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আইনি ব্যবস্থার বাস্তবতায় তিনি যদি আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন, তারপরও রাষ্ট্রীয় তদন্ত ও ফৌজদারি বিচার বন্ধ করতে তাঁকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এদিকে ট্রাম্পের প্রচার অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডেমোক্র্যাট নেতাদের এই কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। এটিকে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ বলুন বা কারচুপি– এটি জনগণের পছন্দকে দমন করতে শাসক শ্রেণির বিপজ্জনক প্রচেষ্টা। এটি ভুল পদক্ষেপ এবং আমেরিকাসুলভ আচরণ নয়। ট্রাম্পের দাবি, তিনি তাঁর অনুসারীদের রক্ষা করার জন্য অভিযুক্ত হতে পেরে খুশি।

সুতরাং, চতুর্থ অভিযোগ তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য আগের তিনটির চেয়ে বেশি ধ্বংসাত্মক হওয়ার আশঙ্কা নেই, অন্তত দলের মধ্যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর লড়াইয়ে।

সোমবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে রিপাবলিকান কনফারেন্সের চেয়ার এলিস স্টেফানিক জো বাইডেনের শীর্ষ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার জন্য নিন্দা করেছেন। তবুও অভিযোগটি সুইং-স্টেট, গুরুত্বপূর্ণ শহরতলি ও মধ্যপন্থি ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থনের ক্ষতি করতে পারে। তবে এর আগে কখনও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মার্ক শর্ট বলেন, কেউই ট্রাম্পের অত্যাশ্চর্য আইনি ঝুঁকির রাজনৈতিক প্রভাবের পূর্বাভাস দিতে পারবে না। অভিযোগ ও বিচারের জন্য আদালতে বসে থাকা এবং পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: