প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, কয়েক দশকের পুরোনো রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত পুরোপুরি ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিন দশক আগের কেমিক্যাল ওয়েপনস কনভেনশন চুক্তির আওতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বাইডেন বলেন, ‘আজ আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মজুত থাকা সর্বশেষ রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডারটিও নিরাপদে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাসায়নিক অস্ত্রের ভয়াবহতা থেকে বিশ্বকে মুক্ত করার পথে আমরা এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।’
কেমিক্যাল ওয়েপনস কনভেনশন চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রই সর্বশেষ দেশ, যারা তাদের ‘ঘোষিত’ রাসায়নিক অস্ত্রের মজুতগুলো ধ্বংস করল। যদিও কোনো কোনো দেশ এখনো রাসায়নিক অস্ত্রের গোপন মজুতগুলো রেখে দিয়েছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাস্টার্ড গ্যাস, ভিএক্স এবং সারিন গ্যাসবাহী প্রজেক্টাইল, রকেটসহ বিভিন্ন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দেশগুলো এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করায় ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেয় এবং অস্ত্রগুলো নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। তবে সমালোচনার পরও অনেক দেশই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়েও এসব অস্ত্রের ব্যবহার চালিয়ে গেছে।
রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে ১৯৯৩ সালে কেমিক্যাল ওয়েপনস কনভেনশনে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয় দেশগুলো। ১৯৯৭ সাল থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়।
গত মে মাসে রাসায়নিক অস্ত্রবিরোধী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ওপিসিডব্লিউর প্রধান ফেরনান্দো আরিয়াস বলেন, তখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো তাদের রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করেছে। ওপিসিডব্লিউর তত্ত্বাবধানে ৭০ হাজার টনেরও বেশি পরিমাণ অস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।
চুক্তির আওতায় চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে রাসায়নিক অস্ত্রের সব মজুত ধ্বংস করতে বলা হয়।
ইউএস আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রায় ২৮ হাজার ৬০০ টন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ছিল। রাশিয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই সবচেয়ে বেশি রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ছিল। ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬০০ টনেরও কম অস্ত্রের মজুত ছিল।
রাশিয়া তাদের ঘোষিত রাসায়নিক অস্ত্রের মজুতগুলো ধ্বংস করেছে ২০১৭ সালে।
বিশ্বের সব রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ক্রমাগত নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন। তিনি মনে করেন, যে গুটিকয়েক দেশ চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেনি, তাদেরও অস্ত্রগুলো ধ্বংস করা উচিত।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: