ইতিহাসের অন্যতম বড় হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সাদা কাপড়ে আবৃত হাজার হাজার মানুষ কাবাঘর তাওয়াফ করতে শুরু করেছেন। রোববার রাত থেকেই সৌদি আরবে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। মক্কা থেকে মিনায় উপস্থিত হচ্ছেন মুসল্লিরা। এর মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
২৫ জুন, রোববার মক্কায় জোহরের নামাজ পড়ে কেউ কেউ হেঁটে, কেউ গাড়িতে চড়ে মিনার উদ্দেশ্যে ছুটছেন। মিনা থেকেই মূলত পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হজের অংশ হিসেবে মুসল্লিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা, মক্কায় পাঁচ দিন অবস্থান করবেন।
করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লি পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে জড়ো হয়েছেন। এ বছর ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘চলতি বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ করতে চলেছি।’
মিনায় অবস্থান নেওয়ার আগে রোববার বিকালে মুসল্লিরা মক্কায় কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করেন। আজ সোমবার সারাদিন ও সারারাত অবস্থানের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সেখানে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর মেহমানরা ইবাদত বন্দিগিতে মশগুল থাকবেন।
এর পর ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর তারা মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানের দিকে যাবেন। আরাফাতে যাওয়ার দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে, হুইল চেয়ারে, বাসে— যে-যেভাবে পারেন পৌঁছাবেন। সবার শরীর সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকবে। তাদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।
৯ জিলহজ হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে, আরাফাত ময়দানে অংশগ্রহণ। মিনা থেকে এসে হাজিরা এখানে খুতবা শোনার পর একই সঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করবেন। হজ কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ও কুরআন তিলওয়াতের মাধ্যমে সূর্যাস্তের অপেক্ষা করবেন।
১০ জিলহজ সূর্যাস্তের পর হাজিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তারা। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন।
তার পর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। এর পর ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরবেন মিনায়। পর দিন সকালে জামারায় পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা ন্যাড়া করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা।
ইসলামের মূল ৫টি স্তম্ভের মধ্যে হজ পঞ্চম স্তম্ভ। হিজরি বর্ষপঞ্জির জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ পালনের জন্য নির্ধারিত সময়। ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী, শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ।
সূত্র : আল-জাজিরা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: