পাকিস্তানে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের সময় ধর্ম অবমাননাকারী নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে এক সপ্তাহের মধ্যে এটি একই ধরনের দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ড।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তি শাহ নওয়াজ সিন্ধু প্রদেশের উমেরকোট জেলার একজন চিকিৎসক। তার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের শ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করা এবং সামাজিক মাধ্যমে নিন্দামূলক বিষয়বস্তু শেয়ার করার অভিযোগ ছিল। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগে থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান নিয়াজ খোসো বলেন, '১৮ সেপ্টেম্বর, বুধবার রাতে নওয়াজকে কাকতালীয়ভাবে হত্যা করা হয়। কর্তব্যরত দুই পুলিশ সিন্ধুর মিরপুর খাসে শহরে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ব্যক্তিকে থামতে ইঙ্গিত দেয়।
খোসো বলেন, থামার পরিবর্তে দুই ব্যক্তি গুলি চালায় এবং পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান, অপরজন নিহত হন।'
খোসো দাবি করেন, গোলাগুলির পরেই পুলিশ সদস্যরা জানতে পারেন, নিহত ব্যক্তি হলেন সেই চিকিৎসক যাকে তারা ধর্ম অবমাননার জন্য খুঁজছিল।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় ধর্মগুরুরা পুলিশকে গোলাপের পাপড়ি ছুড়ে মারছেন এবং ব্লাসফেমির (ধর্ম অবমাননাকর) সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রশংসা করছেন৷
তবে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে সে সম্পর্কে সিন্ধু সরকারের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
এদিকে, নওয়াজের হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, 'ব্লাসফেমির অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কারণে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।'
ব্লাসফেমির ক্ষেত্রে সহিংসতার এই ধরনের সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এটি একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা। সরকারকে নওয়াজ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃতি অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার নিশ্চিত করতে এবং এর জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: