যুদ্ধের কালো ছায়ার মাঝেও গাজায় উদযাপিত হলো ঈদ

মুনা নিউজডেস্ক | ১৮ জুন ২০২৪ ১৪:৫১

ছবি: সংগৃহীত ছবি: সংগৃহীত

 

বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করেছেন। রোববার (১৬ জুন) মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ঈদের আনন্দের ওপর কালো ছায়া হয়ে ছিল গাজায় চলমান হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষ। তবে এ পরিস্থিতিতেও যথাসম্ভব ঈদের আনুষ্ঠানিকতা পালন করেছেন গাজার মুসলিমরা।

ঈদের দিনেও ফিলিস্তিনের প্রধান শহর গাজা এবং রাফা শহরের পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী তাল এস-সুলতান এলাকাতেও হামলা হয়েছে। তাল এস-সুলতান শহরে হামলায় শত শত পরিবার আটকা পড়েছে।


আল জাজিরার খবরে বলা হয়, শনিবার সকাল থেকে গাজা উপত্যকার দির আল-বালাহ শহরে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, হামাসসহ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এই শহরের অবকাঠামো ব্যবহার করেছে। তবে এর বাইরে হামলা সম্পর্কে ইসরায়েলি বাহিনী আর বিস্তারিত কোন তথ্য দেয়নি। হামলায় এসব স্থানের বাড়িঘরসহ অসংখ্য স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, রোববার গাজা শহরের তিনটি পৃথক বাড়ি থেকে অন্তত ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একইদিন রাফা এবং গাজার শহরের শরণার্থী শিবিরেও নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।


এই মৃত্যু, কান্না আর রক্তপাত সঙ্গে নিয়েই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন ফিলিস্তিনিরা। গাজার দক্ষিণে খান ইউনিস শহরে এক মসজিদের ধ্বংসস্তুপের পাশে ঈদের নামাজ আদায় করেন এলাকাবাসীরা। মধ্য গাজায় দেইর-আল-বালাহ শহরে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরিত এক স্কুলে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজের পর অনেকেই কবরস্থানে ছুটে যান প্রিয়জনের কবর জিয়ারত করতে।

যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজায় আশার খড়কুটো আঁকড়ে রয়েছেন ফিলিস্তিনিরা, বলেন আল জাজিরার তারেক আবু আজ্জুম। "ইসরায়েলের আগ্রাসন সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলেছে শিশুদের খুশি রাখার। কারণ আজ অনেক শিশুই তাদের বাবা-মা ছাড়া ঈদ করবে।"

শিশুদের ঈদের খুশিতে শামিল করতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে গাজাবাসীরা। খান ইউনিসে ঈদের দিন সকালে শিশুদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে এক ব্যক্তিকে।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকার জানিয়েছে, গাজায় কোনো কোরবানির পশু ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল। আর অনেকদিন যাবত চলমান যুদ্ধের কারণে গাজায় কোনো গবাদিপশু অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। এ কারণে ঈদে ফিলিস্তিনিরা কোরবানি দিতে পারেনি।

অন্যদিকে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি রোববার ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু সেখানে কোনো উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল না। তারা গাজা উপত্যকায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের হামলা নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির। পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ এলাকাতেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: