ভারতের উত্তরপ্রদেশে আর মিলবে না ‘হালাল’ খাবার। রাজ্যটিতে হালাল ট্যাগযুক্ত সকল ধরনের খাবার ও পণ্যে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এমনকি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। ১৯ নভেম্বর, রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকার আজ থেকে হালাল ট্যাগযুক্ত সকল পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। রাজ্য সরকার বলেছে, হালাল ট্যাগযুক্ত খাদ্য পণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং বিক্রয় অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে রপ্তানির জন্য যে হালাল খাবার উৎপাদন করা হয়ে থাকে, সেটির ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে না।
উত্তর প্রদেশ সরকারের অফিশিয়াল নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাজ্যে অবিলম্বে সকল ধরনের হালাল খাবার উৎপাদন, সংগ্রহ, বন্টন ও বিক্রির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। যদি কেউ এই আদেশ অমান্য করে হালাল খাদ্যপণ্য উৎপাদন বা বিক্রি করেন এবং হালাল সার্টিফায়েড ওষুধ, মেডিকেল ডিভাইস বা কসমেটিক্স বিক্রি করেন, তবে ওই ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বেশ কিছু মেডিসিন, মেডিকেল ডিভাইস ও কসমেটিক্স পণ্যেও হালাল সার্টিফিকেট থাকে। উত্তর প্রদেশ সরকারের দাবি, সরকারি নিয়মে কোথাও ওষুধ বা কসমেটিক্সে হালাল সার্টিফিকেশন মার্কিংয়ের নিয়ম নেই। ১৯৪০ সালের ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক্স আইনেও এই সংক্রান্ত কোনও উল্লেখ নেই।
সংবাদমাধ্যম বলছে, একটি সংস্থা ও বেশ কয়েকজন ব্যক্তির ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে ‘নকল হালাল’ সার্টিফিকেটের নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার দায়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হালাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড চেন্নাই, জমিয়াতে উলামা-ই-হিন্দ হালাল ট্রাস্ট দিল্লি, হালাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া মুম্বাই, জমিয়াতে উলামা মহারাষ্ট্রসহ একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় ভাবাবেগকে’ ব্যবহার করে বিক্রি বাড়ানোর অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
মূলত হালাল পণ্য বিক্রির বিরুদ্ধে সম্প্রতি লখনৌর পুলিশ কমিশনারেটে এসব সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। শৈলেন্দ্র শর্মা নামে এক ব্যক্তি ওই এফআইআর দায়ের করেন।
তার অভিযোগ, ওইসব সংগঠনের কোনও অধিকার নেই কোনও পণ্যকে হালাল সার্টিফিকেট দেওয়ার। এরা বিশেষ এক ধর্মের মানুষকে বিশেষ পণ্য বিক্রির ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে।
তার দাবি, ওইসব সার্টিফিকেট দিয়ে তারা অর্থ আয় করছে। এর মধ্যে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। ওই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে ‘দেশবিরোধী কার্যকলাপে’।
পরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, এসব পণ্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। হালাল সার্টিফিকেট দেশের ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ নষ্ট করছে। এর থেকে আয় হওয়া অর্থ ‘দেশবিরোধী কার্যকলাপে’ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ‘বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষতি’ হচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: