কমিউনিটি সাংবাদিকতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্থান-কাল পাত্রভেদে পাঠকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা পুরণে একজন সাংবাদিক বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বিবেকনির্ভর সাংবাদিকতার সময়ের দাবী। ২ জুন রোববার মুনা নিউইয়র্ক মিডিয়া বিভাগের কর্মশালায় এসব কথা বলেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা: ওয়াজেদ এ খান। নিউইয়র্ক নর্থ ও সাউথ জোন কর্তৃক আয়োজিত কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় মুনা সেন্টার অফ জ্যাকসন হাইটসে। এতে সভাপতিত্ব করেন মুনা ন্যাশনাল এসিস্টেট এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আনিসুর রহমান গাজী।
রিপোর্ট লেখার পদ্ধতি ও কমিউনিটি সাংবাদিকতার উপর আলোচনা করেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা: ওয়াজেদ এ খান, রিপোর্ট তৈরীতে বাংলা বানান ও উচ্চারণ বিষয়ে আলোচনা করেন ইটিভির সাবেক নিজউ এডিটর মাহাথির ফারুকী। আমন্ত্রতি অতিথি ছিলেন এমসিটিভি ইউএস’র সিইও ও প্রেসিডেন্ট প্রবীণ সাংবাদিক কাজী সামসুল হক, সাপ্তাহিক রানার পত্রিকার সম্পাদক জয়নাল আবেদীন। শুরুতে দারসুল কুরআন পেশ করেন মুনা জ্যাকসন হাইটস চ্যাপ্টারের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক সাউথ জোন মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আমিনুর রসুল জামসেদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম মজুমদার।
ডা: ওয়াজেদ এ খান বলেন, রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে রির্পোটারকে সাধারণত ৬টি 'ডবিউ-ও এইচ যথা: হু, হোয়াট, হয়েন, হয়ার, হয়াই এবয় হাউ এর দ্বারা প্রশ্নের মাধ্যমে বিষয়ের স্পষ্টতা আনতে হয়। উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ যথাযথ পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয় বিচার-বিশেষণ ও যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে রির্পোট লিখতে হয়। একটি আদর্শ রির্পোট দুই থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করা হয়। এছাড়াও ঘটনাকে সহজ ও সাবলিলভাবে উপস্থাপনের করাই শ্রেয়:। সাধারণ পাঠকদের কথা বিবেচনায় রেখে কঠিন শব্দ চয়ন না করে সহজভাবে রিপোর্ট লেখাটাই উত্তম।
তিনি বলেন, একজন রির্পোটার প্রত্যক্ষ ঘটনার সাক্ষ্য হতে হয় অথবা কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সে সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সময় প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে হয়তো অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার সঙ্গে তাকে যোগসূত্র রচনাও করতে হয়। এ ক্ষেত্রে রির্পোটার ইতিহাস লেখকের ভূমিকা পালন করেন।
ডা: খান বলেন, কমিউনিটি সাংবাদিকতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবে সিরিয়াস কনটেন্টের ব্যাপারে পাঠকদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। স্থান-কাল পাত্রভেদে পাঠকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা পুরণে একজন সাংবাদিক বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। বিবেকনির্ভর সাংবাদিকতাই সময়ের দাবী। একজন রির্পোটার প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা করছি।
মাহাথির ফারুকী বলেন, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এই ভাষাটি যে অনেক সুন্দর ও মধুর তাতে কোন সন্দেহ নেই। ভাষাটিতে অনেকগুলো বর্ণ এবং তার সঙ্গে আরও অনেক সহযোগী চিহ্ণ ব্যবহৃত হওয়ায় প্রায় সকল ধরনের উচ্চারণই ভাষাতে করা যায়, যা পৃথিবীর অনেক ভাষাতেই সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, বর্ণ ও সহযোগী চিহ্নের আধিক্যের কারণে অনেক সময়ে আবার প্যাঁচও লাগে। এছাড়া আছে সংযুক্ত অক্ষর, শব্দের উৎপত্তিগত বিষয় ইত্যাদি। এগুলোও প্যাঁচ লাগিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে প্রচুর বানান ভুল হয়। রির্পোটের ক্ষেত্রে বানান ভুল হলে যিনি পড়বেন তিনি উচ্চারণ ভুল করেবে এটাই স্বাভাবিক । তবে বাংলা উচ্চারণে আঞ্চলিকতা পরিহার করতে পাররেই সুন্দর রির্পোট উপহার দেওয়া সম্ভব।
কাজী সামসুল হক বলেন, সত্য ও স্বাধীন সংবাদ প্রকাশ এবং পরিবেশন করা ইবাদত। কারও আজ্ঞাবহ বা পক্ষ নিয়ে অসত্য ও অন্যায় সংবাদ প্রকাশ করা নিন্দনীয়। গুনাহের কাজ। তিনি বলেন, ইসলামে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। তবে মতপ্রকাশ করতে গিয়ে জনগণ, সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করা যাবে না। কারও সম্মানে আঘাত হানা যাবে না।
আনিসুর রহমান গাজী বলেন, গণমাধ্যম হলো জাতীয় জীবনের আয়না। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ । সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদের তথ্য যাচাই ও সত্যতা নিরূপণ করা সাংবাদিকের অপরিহার্য দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে শেষে বিশ্বশান্তি কামনা করে দোয়া করেন সাংবাদিক রশীদ আহমদ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: