মঙ্গলবার কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৭ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৩৩

সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত ছবি

মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই/ যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই। কিংবা বল বীর, বল উন্নত মম শির ॥ শির নেহারি নত শির ওই শেখর হিমাদ্রির/ আমার গোরের পাশ দিয়ে ভাই নামাজিরা যাবে, পবিত্র সেই পায়ের ধ্বনি এ বান্দা শুনতে পাবে। এরকম অসংখ্য জনপ্রিয় কবিতা গান লিখে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

তিনি একধারে বিদ্রোহী কবি, চির প্রেমের কবি, যৌবনের দূত। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার তাঁর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বাংলাদেশের বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা কবিতায় নজরুলের আবির্ভাব একেবারেই উল্কার মত। হঠাৎ করে একদিন তিনি বাংলা সাহিত্যে আবির্ভুত হয়ে সমস্ত আকাশকে কিভাবে রাঙ্গীয়ে গেলেন অথবা উজ্জ্বল করে দিলেন তা নিয়ে এখনো গবেষণা হতে পারে। কোন সঞ্জীবনি মন্ত্রে তিনি উচ্চকন্ঠে বলতে পারেন ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’ অথবা মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত/ আমি সেই দিন হব শান্ত/ যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,/ অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না-’।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

জাতীয় কবি বেঁচেছিলেন ৭৭ বছর। জন্মের পর থেকে মাত্র ৪৩ বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবন কাটিয়েছেন। এর মধ্যে সাহিত্য রচনার কাল ছিল মাত্র ২৪ বছর।

১৯৭২ সালের ২৪ মে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে কবি সপরিবারে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশ সরকার কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন এবং জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। তার জীবনকাল ৭৭ বছর হলেও ১৯৪২ সালের জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘ ৩৪ বছর ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি অসহনীয় নির্বাক জীবন কাটিয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: