জুলাইয়ে বড় প্রবৃদ্ধি পেলেও আগস্টে কমেছে বাংলাদেশের রপ্তানি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৭

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি খাতে আগস্ট মাসে কিছুটা মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। জুলাই মাসে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হলেও আগস্টে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশের বেশি। তবু মাসিক হিসেবে পণ্য রপ্তানি ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা এখনো তুলনামূলক শক্তিশালী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশটির জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। ওই সময়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। কিন্তু আগস্টে রপ্তানি নেমে আসে ৩৮৮ কোটি ডলারে। গত বছরের আগস্টে রপ্তানি হয়েছিল ৪০৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ, গত বছরের একই মাসের তুলনায় এবার রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। আর এই খাতে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে অর্ডার তুলনামূলক কম থাকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারের অনিশ্চয়তা।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পালটা শুল্ক কার্যকর হওয়ার আলোচনার কারণে ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। গত ৩১ জুলাই থেকে এ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকায় অনেক ক্রেতা আগে ভাগেই অর্ডার পাঠান। ফলে জুলাই মাসে রপ্তানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। স্থগিত থাকা বহু অর্ডারও ওই মাসেই জাহাজীকরণ করা হয়। তবে আগস্টে এসে সেই ধারাবাহিকতা কমে গেছে। শেষ পর্যন্ত ৭ আগস্ট পালটা শুল্ক কার্যকর হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এখনো আগস্ট মাসে কোন খাত থেকে কত রপ্তানি হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। ফলে তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধি বা পতনের চিত্র পরিষ্কার নয়। তবে সাধারণভাবে মনে করা হচ্ছে, অর্ডার সংকট এবং মৌসুমি প্রভাবের কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে।

ইপিবির প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ডলার।

রপ্তানিকারক সমিতির নেতাদের ভাষায়—ট্রাম্প প্রশাসনের পালটা শুল্ক চূড়ান্ত হওয়ার আলোচনার কারণে অর্ডারের গতি ব্যাহত হয়েছিল। এ ছাড়া মৌসুমি কারণে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে রপ্তানি কম হওয়া স্বাভাবিক। তাদের মতে, অর্ডার আসার হার অক্টোবর থেকে আবার বাড়তে পারে।

আগস্ট মাসে রপ্তানি খানিকটা কমলেও বাংলাদেশের সামগ্রিক রপ্তানি খাত এখনো ইতিবাচক ধারা বজায় রেখেছে। মৌসুমি প্রভাব ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাপ কাটিয়ে উঠতে পারলে বছরের শেষভাগে প্রবৃদ্ধি আবারও শক্তিশালী হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: