
আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করলো বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’ (আপ বাংলাদেশ)। ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে প্ল্যাটফর্মটি। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে আপ বাংলাদেশ। আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা।
কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে আলী আহসান জুনায়েদকে। আর সদস্য সচিব আরিফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়ক রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠন নাইম ইসলাম ও মুখপাত্র হিসেবে আছেন শাহরিন সুলতানা ইরা।
বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পবিত্র কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় এই আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ের আগেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ছোট ছোট দলে জড়ো হতে থাকেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগতরা। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ওয়াসিমের বাবা শফিউল আলমসহ ঢাকার ভেতরে জুলাইয়ের শহীদদের পরিবারের সদস্যরা যোগ দেন।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, আজকের এ মঞ্চ শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগ মঞ্চ। বাংলাদেশে পিলখানা, শাপলা গণহত্যা থেকে শুরু করে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে তাদের আত্মত্যাগের মঞ্চ এটা। শহীদদের ও আহতদের অনুভূতিকে হৃদয়ে ধারণ করে আমাদের দল এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দীর্ঘ ১৬ বছরের জুলুম ও আত্মত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে শপথ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ রাজনীতি করতে হলে এসব শহীদ ও জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা সামনে নিয়ে রাজনীতি শুরু করতে হবে। জুলাইয়ে আত্মত্যাগকারী পরিবার, নির্দলীয় মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় ঐক্য গঠন করে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কোনো ধরনের গড়িমসি দেখতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণাভরে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই বাংলাদেশের মানুষের এখন স্লোগান ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা।’
শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা বলেন, খুনিদের বিচার নিয়ে সরকার যা করছে তা দেখে মনে হচ্ছে সরকার আমাদের সঙ্গে টিটকারি করছে। আমাদের বিচারের আশা দিয়ে আওয়ামী দোসরদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে। খুনিরা দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সরকার তাদের গ্রেফতার করেছে না। আমাদের কলিজা তখন ঠান্ডা হবে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে। শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি- অতি দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দেন।
রাফে সালমান রিফাত বলেন, জুলাইয়ে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা হবে আপ বাংলাদেশের লক্ষ্য। আমরা সকলকে জানিয়ে দিতে চাই, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে নিয়েই নতুন বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হবে এবং জুলাইয়ে আকাঙ্ক্ষার আলোকেই সব ব্যক্তি ও মতের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের মৃত্যু পরোয়ানা লিখার জন্য শহীদ মিনারের ডান দিকে একটি লেখার বোর্ড এবং 'জান দিব তবু জুলাই দিব না কভু' একটি মোটিফ রাখা হয়। লেখার বোর্ডে আওয়ামী লীগের শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন মনোভাব লিখেন অনেকেই। এছাড়াও অনেককেই মোটিফে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়।
আপ বাংলাদেশ ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ হলেন- ১। মোঃ জসিম উদ্দিন, ২। জাহিদুর রহমান, ৩। রবিউল করিম, ৪। মুরাদ হোসেন, ৫। সাজ্জাদ হোসেন, ৬। হায়াত শাহেদ, ৭। কাজী সালমান, ৮। আল মাহমুদ, ৯। দিলারা খানম, ১০। সুলতান মারুফ তালহা, ১১। আবরার হামিম, ১২। জাহিদ হাসান, ১৩। মাসুদ রানা, ১৪। আসমাউল হুসনা, ১৫। ফারজানা আক্তার, ১৬। আহমদ করিম চৌধুরী, ১৭। আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, ১৮। নজরুল ইসলাম, ১৯। উমার রাজী আল ফারুক, ২০। ফারহা জাবিন লিরা, ২১। কাজী আহনাফ তাহমিদ, ২২। বখতিয়ার মুজাহিদ সিয়াম, ২৩। আলী আম্মার মুয়াজ, ২৪। মোহাম্মদ রিদওয়ান হাসান, ২৫। আহসানুল্লাহ, ২৬। শাহারিন সুলতানা ইরা, ২৭। তৌসিফ মাহমুদ সোহান, ২৮। মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, ২৯। সাইফুল ইসলাম সুজন, ৩০। আব্দুল কাইয়ুম সৌরভ, ৩১। মো. আল আমিন রিফাত, ৩২। বদরে আলম শাহিন, ৩৩। মুয়াজ বিন মাহবুব, ৩৪। ফারহানা শারমিন সূচি, ৩৫। মাসুমা বিল্লাহ, ৩৬। মুত্তাকী বিন মনির, ৩৭। মীর শিবগতুল্লাহ তকি, ৩৮। দ্বীন ইসলাম, ৩৯। সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, ৪০। জি এম ফারুক, ৪১। আব্দুল আলিম, ৪২। মোহাম্মদ মোশারফ হুসাইন, ৪৩। সাদ্দাম হোসাইন, ৪৪। এম ওয়ালিউল্লাহ, ৪৫। রাহাত বিন সায়েফ, ৪৬। সাদাব মুবতাসিম প্রান্তিক, ৪৭। তামজিদুল ইসলাম, ৪৮। আরাফাত ই রাব্বি প্রিন্স, ৪৯। রিজওয়ানুল বারী, ৫০। সরোজ মেহেদী, ৫১। দেলোয়ার হাসান শিশির, ৫২। নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ৫৩। জায়েদ হাসনাইন, ৫৪। তানভীর আজম, ৫৫। নাহিদা মুসাররাত, ৫৬। শেষ স্বপ্নীল হক আদিবা, ৫৭। আব্দুল্লাহ নাসের, ৫৮। মো: সুয়াইব হাসান, ৫৯। মো: তানভীর আহমেদ, ৬০। আনিসুর রহমান, ৬১। হাসান মাহমুদ, ৬২। মো শাহজালাল, ৬৩। জেরিন তাহসিন, ৬৪। আল ইমরান সুজন, ৬৫। মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ৬৬। কাউসার আলম, ৬৭। সিরাজুম মনিরা, ৬৮। বোরহান উদ্দিন নোমান, ৬৯। মিনহাজুর রহমান রেজবী, ৭০। আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ, ৭১। মোস্তফা কামাল মাহথির, ৭২। সাইফুল্লাহ আল গালিব, ৭৩। মাহমুদুল হাসান বাহার (প্রিয়ত), ৭৪। আলী আহসান জুনায়েদ, ৭৫। আরেফিন মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ্, ৭৬। রাফে সালমান রিফাত, ৭৭। মোঃ নাঈম আহমাদ, ৭৮। মিসবাউর রহমান (আসিম), ৭৯। মহিউদ্দিন হাসান, ৮০। সাইদুল ইসলাম ও ৮১। নোমান আব্দুল্লাহ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: