ইরানে শিক্ষার্থীদের অষ্টম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আওকাফ বিষয়ক সংস্থার তত্ত্বাবধানে ছেলে ও মেয়ে দুটি শাখায় প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছেলেদের মধ্যে পূর্ণ কোরআন হিফজ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশের আহমদ বশির এবং তিলাওয়াত বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে মুশফিকুর রহমান। আর মেয়েদের মধ্যে পূর্ণ কোরআন হিফজ বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে মাইমুনা বিনতে মুনিরুজ্জামান।
এ বছর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ১৫টি দেশের ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি, বুধবার রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের সামিট হলে বর্ণাঢ্য সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি, সংস্কৃত ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ মাহদি ইসমাইলি, শিক্ষামন্ত্রী রেজা মুরাদ সাহরি, আওকাফ ও দাতব্য বিষয়ক সংস্থার প্রধান মেহদি খামিসিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাটি ছেলে ও মেয়ে শাখায় দুটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছেলেদের মধ্যে হিফজ বিভাগের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন বাংলাদেশের আহমদ বশির, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ইরানের সৈয়দ মোহাম্মদ সাদেক হোসেইনি এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন নাইজেরিয়ার আবদুল্লাহি গিরা। তিলাওয়াত বিভাগে প্রথম হয়েছে ইরানের মাহদি আকবারি জারিন, দ্বিতীয় হয়েছে পাকিস্তানের মুহাম্মাদ আবু বকর ও তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশের মুশফিকুর রহমান।
এ প্রতিযোগিতার মেয়েদের হিফজ বিভাগ প্রথম হয়েছে ইরানের মোহান্না কানবারি শিরজিলি ও দ্বিতীয় হয়েছে সেনেগালের দিয়াতারা আন্দিয়া বুসু এবং তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশের মাইমুনাহ মনিরুজ্জামান। আর তিলাওয়াত বিভাগে প্রথম হয়েছে ইরানের আদিলা শাইখি ও দ্বিতীয় হয়েছে সিঙ্গাপুরের আতিকা সুহাইমি এবং তৃতীয় হয়েছে ইরাকের দুয়া আস-সাঈদ।
এদিকে একই সময়ে ইরানের ৪০তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ছেলে ও মেয়ে শাখায় ৪০টি দেশের ৬৯ জন অংশ নেয়।
আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় প্রথমবার বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন ইন্টারন্যাশনাল কোরআন রিসাইটেশন অ্যাসোসিয়েশনের (ইকরা) সভাপতি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আযহারী। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি আহমদ বশির আলজেরিয়ার কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছিল। সে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করে। তার পিতার নাম মাওলানা মো. আব্দুর রশিদ। তার বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বেগুনাই গ্রামে।
এদিকে মুশফিকুর রহমান গত বছর সৌদি আরবের কোরআন প্রতিযোগিতায় চতুর্থ হয়। সে কক্সবাজারের মা’হাদ আন-নিবরাসে হিফজ সম্পন্ন করে বর্তমানে যাত্রাবাড়ীর তাহফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদরাসায় পড়ছে।
এদিকে মাইমুনা বিনতে মনিরুজ্জামান রাজধানীর ওয়ারীর সাউদা বিনতে জামা’আ মহিলা মাদরাসার শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ। তাঁর বাবা মাওলানা মনিরুজ্জামান শরিফ তালুকদার কাতার ধর্মমন্ত্রণালয়ের ইমাম হিসেবে নিয়োজিত।
এবার প্রতিযোগিতার প্রতিপাদ্য ছিল ‘ওয়ান বুক ওয়ান ন্যাশন দ্য বুক অব রেজিস্ট্যান্স’। এর আগে গত বছর আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছিল বাংলাদেশের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হাফেজ শেখ মাহমুদুল হাসান। ২০২২ সালে এ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরীম।
সূত্র : ইকনা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: