ট্রাম্পের পরিকল্পনারি দ্বিতীয় ধাপ অন্ধকারে, ঝুঁকি বাড়ছে গাজা বিভক্তির

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৩০

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যেই জিম্মি-বন্দিবিনিময়ের মাধ্যমে শেষ হতে চলেছে। তবে পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ মোটেও এগোয়নি। গাজায় স্বাধীন কর্তৃপক্ষ বসানো কিংবা নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করার বিষয়টি এখনও অন্ধকারেই রয়ে গেছে। এ অবস্থায় ইসরায়েলি সেনাদের চিহ্নিত করা হলুদ রেখা বরাবর গাজা বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। অন্যদিকে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। বিশেষ করে বিভিন্ন স্থানে প্রায় প্রতিদিনই গোলাবর্ষণ করছে তারা। নিহত কিংবা আহতের তালিকা বড় হচ্ছে দিন দিন। গতকাল মঙ্গলবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

গাজা এখন কার্যত দুই অংশে ভাগ হয়ে গেছে। হলুদ রেখা বরাবর এলাকা ইসরায়েলি সেনারা নিয়ন্ত্রণ করছে, যা গাজার মোট এলাকার ৫৩ শতাংশ। এই এলাকার মধ্যে রয়েছে গাজার বেশির ভাগ কৃষিজমি, দক্ষিণে রাফা, গাজা শহরের কিছু অংশ এবং অন্যান্য নগর এলাকা। আর অস্ত্র ত্যাগ না করা পর্যন্ত বাকি অংশ হামাসের নিয়ন্ত্রণেই থাকছে বলা যায়। এ অবস্থায় ট্রাম্পের পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন না হলে গাজা কার্যত বিভক্তই থাকবে। এই বিভাজন বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরই মধ্যে ইসরায়েল ২৮২ বার শান্তিচুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় অন্তত ২৪২ নিহত ও ৬২০ জন আহত হয়েছেন। গত দুই বছরে দখলদার বাহিনীর হামলায় প্রাণ গেছে ৬৯ হাজার ১৬৯ ফিলিস্তিনির।

বর্তমানে গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষ তাঁবুতে বসবাস করছে। কারণ ইসরায়েলি হামলায় তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজার বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছে। রয়টার্সের ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, গাজা শহরের উত্তর-পূর্বে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বোমাবর্ষণের ফল এটা।

ট্রাম্পের পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ কার্যকর হলে তথাকথিত হলুদ রেখা থেকে ইসরায়েলকে আরও সরে যেতে হবে। পাশাপাশি গাজা শাসনের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য একটি বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কিন্তু চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কবে বাস্তবায়ন হবে, তা কেউ জানে না। হামাস নিরস্ত্রীকরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে শুরু থেকেই। তারা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল সমর্থিত কোনো কর্তৃপক্ষের শাসন মানবে না। একই কারণে বহুজাতিক বাহিনী গঠনও এখন অনিশ্চয়তায়। ইতোমধ্যে কাতার ঘোষণা করেছে, স্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া তারা গাজার বাহিনীতে অংশ নেবে না।

পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের অংশ হিসেবে হামাস গাজায় আটকে থাকা শেষ ২০ জন জীবিত জিম্মিকে এবং ২৪ জন মৃত জিম্মির দেহাবশেষকে মুক্তি দিয়েছে। আরও চার জিম্মির দেহাবশেষ এখনও গাজায় রয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: