দু’দিনের মাথায় আবারও রাশিয়ার টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত ২৪শে জুন পিএমসি ওয়াগনারের বিদ্রোহ চেষ্টার সময় রুশরা যেভাবে ঐক্য ধরে রেখেছিল তার জন্য গোটা জাতিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, রক্তপাত এড়াতে প্রথম থেকেই সচেষ্ট ছিল তার প্রশাসন। পাশাপাশি তিনি ওয়াগনার বাহিনীকে ক্ষমা করে দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূর্ণ করার আশ্বাসও দেন।
তবে ওয়াগনারের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আর আগের মতো থাকবে না বলেও নিশ্চিত করেন পুতিন। ভাষণে তিনি বলেন, আমরা জানি যে, ওয়াগনারের বেশিরভাগ সদস্যই দেশপ্রেমিক এবং দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত। দনবাস ও নভোরোসিয়া অঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে তারা তাদের সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন। যেসব ওয়াগনার যোদ্ধারা প্রিগোজিনের বিদ্রোহে যোগ দেননি তাদেরকে ধন্যবাদ দেন পুতিন। তবে ওয়াগনারের সদস্যদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা আসলে কি করবে।
পুতিন বলেন, সকল ওয়াগনার সেনার সামনে এখন দুইটি অপশন রয়েছে। হয় তারা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নতুন চুক্তি করবে। কিংবা তারা বেলারুশ চলে যাবে।আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আমি রাখবো। কিন্তু আপনাদের ইচ্ছা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে। যারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেড়েছেন তারা চাইলে নতুন চুক্তি করতে পারেন।
পুতিন আরো বলেন, যারা প্রিগোজিনের বিদ্রোহে সমর্থন দিয়েছে তারাও রাশিয়া ও রাশিয়ার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। রাশিয়ার শত্রুরা তথা কিয়েভের নব্য নাৎসিরা যা চেয়েছিল, তাই সত্যতে পরিণত করেছে বিশ্বাসঘাতকরা। তারা চায় রাশিয়া যুদ্ধে হারুক এবং রাশিয়া গৃহযুদ্ধে বিভক্ত হয়ে যাক। পুতিন জানান, বিদ্রোহের খবর পেয়ে তিনি সবার আগে রক্তপাত এড়ানোর নির্দেশ দেন। পরিস্থিতি সামলাতে সময়ের দরকার ছিল। যারা ভুল করেছে তাদের হুঁশে ফেরার জন্য সময় প্রয়োজন ছিল। তারা একসময় বুঝতে পারে যে, রাশিয়ার সমাজ তাদের কাজবাজকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে এমন আচমকা বিদ্রোহের মধ্যেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনী, গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যেভাবে দেশের পক্ষে এক হয়েছিল তার প্রশংসা করেন পুতিন। রাশিয়ার সেলেব্রেটি থেকে শুরু করে ধর্মীয় সংস্থাগুলোও পুতিনের পক্ষে দাড়িয়ে গিয়েছিল সেদিন। ভাষণে তাদের প্রতি ধন্যবাদ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যে কোনো বিদ্রোহ থামানোর জন্য রাশিয়ানদের এই দেশপ্রেমিক চেতনাই যথেষ্ট। রুশরা যে সংহতি সেদিন দেখিয়েছে, তাই প্রমাণ করে যে কোনো ধরনের ব্ল্যাকমেইল কিংবা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা কাজে আসবে না।
এছাড়া ভাষণে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকেও ধন্যবাদ দেন পুতিন। লুকাশেঙ্কোর চেষ্টাতেই দ্রুত নিজের ভুল বুঝে বিদ্রোহ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রিগোজিন। বর্তমানে বেলারুশে নির্বাসনে রয়েছেন ওয়াগনার প্রধান। যদিও তার বাহিনীর ওপরে তার নিয়ন্ত্রণ কতখানি রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সূত্র : সিবিএস নিউজ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: