
নির্বাচনের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনা ও দরকষাকষির পর জার্মানির মধ্য-বামপন্থি দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এএসপিডি)-কে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠনে একমত হয়েছে রক্ষণশীল খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ) আর তাদের বাভারিয়া রাজ্যের সিস্টার কনসার্ন খ্রিস্টীয় সামাজিক দল (সিএসইউ)।
বুধবার রাজধানী বার্লিনে দুই পক্ষ থেকেই জোটের গঠনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। সিডিইউর দলনেতা ফ্রিড্রিশ ম্যার্ৎস, সিএসইউর দলনেতা মার্কোস স্যোডার এবং এসপিডির রাজনীতিবিদ সাসকিয়া এসকেন ও ক্লিংবাইল উপস্থিত ছিলেন। জোটের ঘোষণার সময়ে দেয়া বক্তৃতায় ফ্রিড্রিশ ম্যার্ৎস বলেন, ‘জোট সরকার আমাদের দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
জার্মানির নতুন সরকারের জোটে কোন কোন দল থাকছে সে বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর উদ্ভুত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতায় কারা জার্মানির, অর্থাৎ ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশটির নেতৃ্ত্বে আসছেন, তা অনেক বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে সর্বাধিক প্রায় ২৯ ভাগ ভোট নিয়ে চালকের আসনে রয়েছে সিডিউই-সিএসইউ। সেই হিসেবে ফ্রিড্রিশ ম্যার্ৎস হতে যাচ্ছেন জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর। তার আগে জোটে মতানৈক্যের জেরে ভেঙে পড়েছিল এসপিডির নেতৃত্বাধীন ওলাফ শলৎসের সরকার। সংবাদমাদ্যমের খবরে বলা হয়, জোট গঠনের আলোচনায় মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি।
জানা গেছে, দু’দলই সরকারের সরকারি ঋণ নিয়ে, জার্মান ভাষায় শুলডেনব্রেমজে, কঠোর সাংবিধানিক নীতি তৈরিতে একমত হয়েছে। এই নিয়মে পরিবর্তন আনা গেলে জার্মান সরকার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারবে। সেইসাথে এই অবকাঠামো ও পরিবেশ সুরক্ষা খাতে পাঁচশ বিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ তৈরি করতে পারবে সরকার।
ফ্রিড্রিশ ম্যার্ৎস বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা রয়েছে, যেটি নিয়ে আমরা আমাদের দেশকে যৌথভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’ তিনি বলেন, ‘জোটের এই চুক্তি দেশের নাগরিকদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা। এবং এটি ইউরোপীয় মিত্রদের কাছেও একটি চিহ্ন। পদক্ষেপ নেওয়ার মতো একটি সরকার পেতে যাচ্ছে জার্মানি।’
এদিকে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, নতুন সরকারে মোট আটটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারে এসপিডি। সিডিইউ ৬টি এবং সিএসইউ ৩ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারে। চ্যান্সেলর হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন সিডিইউ এর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: