যুদ্ধবিরতি ঘোষণায় থামেনি ইসরাইলি হামলা, গাজায় নিহত ৩০

মুনা নিউজ ডেস্ক | ১৬ জানুয়ারী ২০২৫ ১২:২৪

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা ১৫ মাস ধরে চলা নৃশংসতার পর কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতির কথা জানা গেছে। যুদ্ধক্লান্ত গাজাবাসী এ খবরে উল্লাসে মেতেছেন। তবে বন্ধ হয়নি ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা। গাজার খান ইউনিস এলাকা ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় তিনজনসহ মোট ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিস এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় দুজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বুধবার এক দিনে গাজায় ইসরাইলি নিহত হয়েছেন হামলায় ৮২ ফিলিস্তিনি ।

এদিকে গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে আবাসিক একটি এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন।

ইসরাইল ও হামাস বিবদমান দুই পক্ষ গতকাল যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছায় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেছেন। এই চুক্তির আওতায় গাজায় সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তির পথও খুলবে।

গাজার আল-আকসা হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা জানান, যুদ্ধবিরতির খবর শোনার পর সেখানকার পরিস্থিতি বদলে যায়। মানুষ উল্লাসে মেতে ওঠেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে পুরো এলাকায় উদ্‌যাপন চলে। এই দৃশ্যপট সেখানে নিকট অতীতে দেখা যায়নি। কেননা, যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন এবং আহত ব্যক্তিদের যন্ত্রণা আর বিষন্নতায় এত দিন ভরে ছিল এলাকাটি।

যুদ্ধবিরতির খবরে পুরো গাজা উপত্যকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁবুগুলোয় জড়ো হয়ে একসঙ্গে যুদ্ধবিরতির খুশির খবর উদ্‌যাপন করেন। ১৫ মাস ধরে আল-মাওয়াসি এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। সেখানেও উল্লাসে মেতে ওঠেন মানুষ।

এর মাঝেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের কাছে কিজান রাশওয়ান এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় ওয়াফা সংবাদমাধ্যমের খবর, সেখানকার একটি বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত দুজন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের বেসামরিক নিরাপত্তা দপ্তর বলছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার আগে গতকাল দিনভর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচার বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। আর চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে আল-জাজিরার খবর, এসব হামলায় অন্তত ৮২ জন মানুষ নিহত হয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১০ জন নিহত হন। ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা হয় ২৪১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৯৪ জন এখনো গাজায় বন্দী রয়েছেন। হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন।

১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতি

সংঘাতের এই ১৫ মাসের মধ্যে শুরুর দিকে একবার মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। এর পর থেকে কয়েক দফায় যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তির চাপ বাড়তে থাকে। এ লক্ষ্যে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে জোরালো তৎপরতা শুরু করে কাতার, মিসর আর যুক্তরাষ্ট্র। হামাস ও ইসরায়েলের সঙ্গে শুরু হয় আলোচনা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: