কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করতে পারেন শিগগির। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একাধিক সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছে। তবে ট্রুডো এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। সূত্র জানিয়েছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও ট্রুডো একাধিকার পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সূত্রটি রয়টার্সকে জানিয়েছে, কানাডার সংবাদমাধ্যম গ্লোব অ্যান্ড মেইল এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছিল, ট্রুডো আজ সোমবারের মধ্যেই ঘোষণা করতে পারেন, তিনি কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ৯ বছরের দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করবেন।
এ বিষয়টি এমন একসময়ে সামনে এল, যখন কানাডাজুড়ে পরিচালিত একাধিক জরিপে দেখা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ট্রুডোর দল বিরোধী কনজারভেটিভদের কাছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হবে। পাশাপাশি, ট্রুডোর পদত্যাগ তাঁর দলকে এক নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় রেখে যাবে।
সূত্রগুলো গ্লোব অ্যান্ড মেইলকে জানিয়েছে, তারা নিশ্চিত নয় যে ট্রুডো তাঁর পদত্যাগের পরিকল্পনা কখন ঘোষণা করবেন। তবে তাদের আশা, আগামী বুধবার লিবারেল পার্টির আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে ট্রুডোর বৈঠক আছে। সেই বৈঠকের আগেই ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
গ্লোব অ্যান্ড মেইল আরও জানিয়েছে, ট্রুডো এখনই সরে দাঁড়াবেন নাকি লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন, তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে, ২০১৩ সালে যখন লিবারেল পার্টি গভীর সংকটে ছিল এবং আসনসংখ্যার দিক থেকে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে তৃতীয় স্থানে নেমে যায়, তখন ট্রুডো দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। এরপর তিনি টানা ১১ বছর দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডা একটি আগাম দিকে যেতে পারে। যাতে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হতে পারে এবং নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরবর্তী চার বছরের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রুডো কানাডার অর্থমন্ত্রী ডমিনিক লে ব্লাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছেন, তিনি অন্তর্বর্তী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন কি না। গত ডিসেম্বরে যখন ট্রুডো অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন এবং সরকারি ব্যয়-সংক্রান্ত অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলোর বিরোধিতা করেন তখন থেকেই ট্রুডোর বিরুদ্ধে পদত্যাগের চাপ বাড়ছে।
ফ্রিল্যান্ড বরখাস্ত হওয়ার পরিবর্তে পদত্যাগ করেন। তার আগে লেখা এক চিঠিতে তিনি ট্রুডোকে অভিযুক্ত করে বলেন, দেশের জন্য সঠিক বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব না দিয়ে ট্রুডো ‘রাজনৈতিক ছলচাতুরীর’ দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: