ক্রিপ্টোকারেন্সি সংকট তৈরির অভিযোগে অভিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক ডো কওনকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে। এই সংকটের কারণে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল।
ডো কওন টেরাফর্ম প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি টেরা ইউএসডি এবং লুনা নামের দুটি ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল। ২০২২ সালে এই ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোর ধস নামায়, পুরো ক্রিপ্টো বাজারে বড় ধরনের সংকট দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ডো কওন এই মুদ্রাগুলোর ধস নামার জন্য দায়ী এবং তিনি "মাল্টি-বিলিয়ন ডলার ক্রিপ্টো সম্পদ প্রতারণা"-এর সাথে জড়িত।
দক্ষিণ কোরিয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি পালিয়ে যান। পরে ২০২৩ সালের মার্চে মন্টেনেগ্রো থেকে দুবাই যাওয়ার চেষ্টা করার সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। মন্টেনেগ্রোর আদালত তাকে ভুয়া নথি ব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে।
মন্টেনেগ্রোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বা দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রত্যার্পণ চুক্তি না থাকায় ডো কওনের আইনি ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ছিল। তবে দীর্ঘ ১৮ মাসের আইনি লড়াইয়ের পর তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।
ডিসেম্বরে মন্টেনেগ্রোর বিচার মন্ত্রণালয় ডো কওনের প্রত্যর্পণের অনুমোদন দেয়। তাদের দাবি, কওন নিজেও এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন।
কওনের প্রতিষ্ঠান টেরাফর্ম ল্যাবস ২০২১ সালে ব্যাপক পরিচিতি পায়। এর ক্রিপ্টো কয়েন লুনা এবং টেরা ইউএসডি তখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
লুনার ভক্তদের বলা হতো "লুনাটিকস"। কওনকে তারা "রাজা" হিসেবে সম্মান করত।
কিন্তু ২০২২ সালের ৯ মে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ সত্ত্বেও, টেরাফর্ম ল্যাবস ধসে পড়ে। ৪৮ ঘণ্টায় এটি ৯৯ শতাংশ মূল্য হারায়। এই ধসের কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে টাকা তুলে নিতে থাকেন। ফলে পুরো খাতে মূল্যের বড় পতন ঘটে।
বিটকয়েন-এর ওপরেও এর প্রভাব পড়লেও পরবর্তীতে এর মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে থাকে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটির মূল্য এক পর্যায়ে ১ লাখ ডলারে পৌঁছায়।
শেষ পর্যন্ত টেরাফর্ম ল্যাবসকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: