লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে গিয়ে উল্টো মৃত্যুফাঁদে পা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া এ স্থল অভিযানে এখন পর্যন্ত খুব একটা সাফল্য পায়নি ইসরায়েল। উল্টো একের পর এক ইসরায়েলি ট্যাংক গুঁড়িয়ে দিচ্ছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধারা।
গাজার পথঘাট দীর্ঘদিন ধরে চেনা ইসরায়েলি বাহিনীর। অবরুদ্ধ উপত্যকায় তাই সহজেই স্বাধীনতাকামীদের ওপর চড়াও হতে পেরেছে তারা। কিন্তু লেবাননের ক্ষেত্রে এটি পুরো উল্টো। একে তো পথঘাট, একেবারে অচেনা। তার ওপর আবার পাহাড়ি রাস্তা। এসব ল্যান্ডস্কেপে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। আবার প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলি বাহিনীকে লেবাননে ঢুকতে গিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে হামলা চালাচ্ছে।
আর এতেই চোখে অন্ধকার দেখছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে আইডিএফের সদস্যরা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ট্যাংক। বিমান হামলা চালিয়ে ইসরায়েল যতটা সাফল্য পেয়েছিল, স্থল অভিযানে নেমে ততটাই খাবি খাচ্ছে তেল আবিব। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি থিংক ট্যাক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার-আইএসডব্লিউ ও ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রোজেক্ট-সিটিপি ইসরায়েলের দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় লেবানন দিকে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর অতর্কিত হামলা, মাটিতে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণের মতো একের পর এক ফাঁদে পড়েছে। আবার লেবাননের স্থলভাগের ধরনও ইসরায়েলি বাহিনীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পাহাড়ি ও উঁচু-নিচু পথ সেনাবাহিনীর এগিয়ে যাওয়ার জন্য আদর্শ নয়। আর তাই অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সর্বশেষ শুক্রবারও হতাশাজনক একটি দিন কাটিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হিজবুল্লাহ জানায়, এদিন তাদের যোদ্ধাদের হাতে ইসরায়েলের এলিট বাহিনী ২০ জনের বেশি সেনা আহত বা নিহত হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় লেবাননের সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে। এমনকি সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী ও তাদের ট্যাংক লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হিজবুল্লাহ।
এসব হামলা সাফল্যও পেয়েছে হিজবুল্লাহ। একটি গাইডেড মিসাইল ছুড়ে ইসরায়েলের মেরকাভা ট্যাংক গুঁড়িয়ে দিয়েছে লেবাননের যোদ্ধারা। এতে ট্যাংকের ক্রুরা আহত বা নিহত হয়েছে। লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করলেও সীমান্ত এলাকা থেকে কয়েকশ’ মিটারের বেশি এগোতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। চারদিক থেকে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় এখন চোখে রীতিমতো সর্ষের ফুল দেখছে তারা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: