ইউক্রেনসংক্রান্ত পরবর্তী শান্তি সম্মেলনে রাশিয়ার অংশগ্রহণের পক্ষে কথা বলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ। চলতি বছরই এমন সম্মেলন আয়োজন করতে চায় ইউক্রেন।
সাম্প্রতিক দুই আঞ্চলিক নির্বাচনে জার্মানির জোট সরকারের তিন শরিক দলের শোচনীয় ফলাফলের পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধে জার্মানির ভূমিকা সম্পর্কে অনেক মানুষের ক্ষোভও অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আক্রান্ত দেশ হিসেবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার পাশাপাশি চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সরকার যথেষ্ট কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তির কোনো প্রচেষ্টা চালাচ্ছে না বলে অভিযোগ দানা বাঁধছে।
বিশেষ করে মস্কোর অবস্থানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি দল ও বাম রক্ষণশীল বিএসডাব্লিউ দল মানুষের মনে সেই মনোভাবের ফায়দা তুলে নির্বাচনে ভালো ফল করেছে। এমনকি শোলজের এসপিডি দলের একাংশও আরো কূটনৈতিক তৎপরতার প্রত্যাশা করছে।
এমন প্রেক্ষাপটে চ্যান্সেলর শোলজ শান্তিপূর্ণ পথে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পক্ষে কথা বলেছেন। রবিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ও তিনি পরবর্তী শান্তি সম্মেলনে রাশিয়ার অংশগ্রহণের পক্ষে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে গত ১৫ ও ১৬ই জুন সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত শান্তি সম্মেলনে ৭৮টি দেশ অংশ নিয়েছিল। তারা ইউক্রেনের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্বের প্রতি সমর্থন জানালেও সেই লক্ষ্য অর্জনের পথ সম্পর্কে কোনো ঐকমত্যে আসেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেই সম্মেলনে ১০ দফা শান্তির ফর্মুলা পেশ করেছিলেন, যার আওতায় ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সব সেনা তাড়িয়ে দিতে হবে এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে হবে। সেই সম্মেলনে রাশিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
চলতি বছরই দ্বিতীয় শান্তি সম্মেলন আয়োজনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেন। জুলাই মাসের শেষে জেলেনস্কি ‘অর্থবহ ফলাফল’ সম্ভব করতে সেই সম্মেলনে রাশিয়ার অংশগ্রহণের পক্ষে কথা বলেছেন।
জার্মানির জেডডিএফ টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে চ্যান্সেলর শোলজ বলেন, তার মতে এই মুহূর্তে যুদ্ধের পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনার সময় এসে গেছে। যদিও বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ সে দিকে ইঙ্গিত করছে না, তা সত্ত্বেও শোলজ এমনটা মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, অবশ্যই আর একটি শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জেলেনস্কি ও তিনি সেখানে রাশিয়ার উপস্থিতি চান।
বর্তমানে ইউক্রেনের জন্য সহায়তার তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। চ্যান্সেলর শোলজ যতকাল প্রয়োজন, ততকাল ধরে ইউক্রেনের জন্য মদদ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: