স্নায়ুযুদ্ধের পর নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিশ্ব। বলা হচ্ছে, স্নায়ুযুদ্ধের পর বিশ্বব্যবস্থা এর আগে কখনও এমন হুমকির মুখে পড়েনি। বিশ্ব রাজনীতিতে কয়েকটি দেশের সমান্তরাল প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গোয়েন্দারা। আর এসব দেশের উত্থানেই না কি হুমকির মুখে পড়েছে বিশ্ব ব্যবস্থা।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বব্যবস্থার ওপর একচেটিয়াভাবে খবরদারি করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেশটিকে টেক্কা দিয়ে ক্রমেই বাড়ছে চীন ও রাশিয়ার প্রভাব। পরিবর্তিত এই বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপ দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত নয়। তাই তারা বারবার, বিশ্ব ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ার মতো বুলি আওড়াচ্ছে।
এমতাবস্থায় বদলে যাওয়া এই বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন পশ্চিমা গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, এতে করে নতুন ধরনের সাইবার আক্রমণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার এবং নতুন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশ্বকে একটি অস্বাভাবিক ও অস্থির পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চীনের প্রভাব এবং রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শাসনের মৌলিক কাঠামোকে পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে মত দিয়েছেন গোয়েন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করা বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন তারা।
সম্প্রতি লন্ডনে একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান উইলিয়াম বার্নস ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর প্রধান রিচার্ড। তারা বলেন, ইউক্রেনকে সহযোগিতায় একতাবদ্ধ থাকা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই যুদ্ধে রাশিয়া সফল হবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
শনিবার ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে বার্নস ও মুরের একটি যৌথ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো লেখা যৌথ নিবন্ধে বিশ্বব্যবস্থাসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে লিখেছেন তারা। নিবন্ধে বার্নস ও মুর লিখেছেন, ইউক্রেনে যে যুদ্ধ আসন্ন সেটা তারা আগেই আঁচ করতে পেরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছিলেন। এ ছাড়া ইউক্রেনকে সাহায্যে গোপন তথ্যও প্রকাশ করা হয়।
সিআইএ ও এমআই৬ চীনকে চলতি শতকের প্রধান গোয়েন্দা ও ভূরাজনৈতিক হুমকি হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছেন বার্নস ও মুর। দুই গোয়েন্দাপ্রধানের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি ইউরোপজুড়ে রাশিয়ার বেপরোয়া নাশকতামূলক তৎপরতার লাগাম টেনে ধরতে কাজ করার কথাও জানান দুই গোয়েন্দাপ্রধান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: