আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এমপক্সের টিকার প্রথম চালান পৌঁছেছে। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে দেশটির রাজধানী কিনশাসায় টিকাবাহী বিমানটি অবতরণ করে।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, কঙ্গোতে এমপক্সের মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এর প্রাদুর্ভাব আশপাশে দেশেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। ডব্লিউএইচও আন্তর্জাতিক শক্তিকে আহ্বান জানিয়ে বলে, এমপক্স আফ্রিকায় থাকতেই সমন্বিত উদ্যোগে তা নির্মূল করতে হবে। বিশ্বজুড়ে সবাইকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। নয়তো বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর রূপ নিতে পারে এ ভাইরাস।
এদিকে নানা সমস্যায় জর্জরিত কঙ্গো ভাইরাসটি রোধে ব্যর্থ। দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি বিবেচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুদান হিসেবে দেশটিতে টিকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই টিকার প্রথম চালানটিই বৃহস্পতিবার পেল কঙ্গো।
আশা করা হচ্ছে, এসব টিকা দেশটিতে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব রোধে সহায়তা করবে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যামুয়েল রজার কাম্বা মুলাম্বা বলেন, যেসব প্রদেশে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে, সেখানে সবার আগে টিকা দেওয়া হবে। এ টিকা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত। তবে শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের দেওয়া যায়। শিশুদের দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা আলাপ-আলোচনা করছেন। এ জন্য অন্য টিকার প্রয়োজন হতে পারে।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৭ হাজার মানুষের এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১ হাজার ১০০ জনের বেশি। আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বড় অংশই শিশু।
এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে তা ছড়িয়ে যেতে পারে। যৌন সম্পর্কের কারণে ভাইরাসটির জটিল একটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এক ব্যক্তি থেকে পুরো সমাজে ছড়িয়ে পড়ার মতো মারাত্মক উদাহরণ রয়েছে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে পৃথক ঘরে রাখতে হয়। এ ভাইরাসের লক্ষণ সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্তের মতোই। একই রকম উপসর্গ দেখা দেয় এবং দেহে পুঁজ-ভরা ক্ষত সৃষ্টি করে।
ভাইরাসটি আগে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল। এর ‘ক্লেড আই’ ধরন মধ্য আফ্রিকার স্থানীয়দের শরীরে বেশি সংক্রমিত হয়। এ ধরন পরিবর্তিত হয়ে ‘ক্লেড আইবি’-তে রূপ নিয়েছে, যা মারাত্মক এবং বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত। এ ছাড়া ভাইরাসটি রূপ বদল করছে কি না তা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে গবেষণা চলছে।
ইতিমধ্যে কঙ্গোর প্রতিবেশী বুরুন্ডি, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও উগান্ডাসহ ইউরোপ ও এশিয়ার কয়েকটি দেশে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। ডব্লিউএইচও ভাইরাসটি রোধে সব রাষ্ট্রকে সমন্বিত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: