গতকাল শুক্রবার একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণম জয়শংকর বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সংলাপের যুগ শেষ। সীমান্তের ওপারে যে ধরনের ঘটনা ঘটবে, ভারত সে অনুসারেই ইতিবাচক বা নেতিবাচক জবাব দেবে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
জয়শংকর বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে আমি বলতে চাই, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে। তো, এখন বিষয় হলো—আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্ক চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে চাই যে, আমরা নিষ্ক্রিয় নই। তো (সীমান্তের ওপার থেকে) নেতিবাচক বা ইতিবাচক যে ঘটনাই ঘটানো হোক না কেন, আমরা সেই অনুসারে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এসসিওর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানেরা যোগ দেবেন। সেই বৈঠকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তবে মূল বৈঠকের আগে সদস্য দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অর্থনীতি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করবেন।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মুখপাত্র মুমতাজ জাহরা বালুচ নিশ্চিত করেছেন, দেশটি বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য সদস্য দেশগুলোর সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও একটি আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে।’ এ সময় এই মুখপাত্র জানান, কিছু দেশ এরই মধ্যে বৈঠকে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। কোন দেশ নিশ্চিত করেছে তা যথাসময়ে জানানো হবে।
তবে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ও পরিস্থিতির দিকে তাকালে আঁচ করা যাচ্ছে, মোদির ইসলামাবাদে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এ অবস্থায় তিনি এ কর্মসূচিতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে কোনো মন্ত্রীকে পাঠান কি না, সেটাও দেখার বিষয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জম্মুতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা পাকিস্তানে উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে নেতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে পারে। এদিকে গত মাসে কারগিল বিজয় দিবস উপলক্ষে মোদি তার বার্তায় পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, তারা ইতিহাস থেকে কিছুই শেখেনি। তিনি জানান, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ এবং প্রক্সি যুদ্ধের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টা করছে।
পাকিস্তান সফরকারী সবশেষ ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তিনি ২০১৫ সালে পাকিস্তান সফর করেছিলেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতির সম্ভাবনা কম। কারণ, পাকিস্তান চায় ভারত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: