মুকেশ আম্বানীকেও পেছনে ফেললেন গৌতম আদানি

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২৯ আগস্ট ২০২৪ ২০:২৪

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

ভারতের ধনীর তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে গৌতম আদানি ও তাঁর পরিবার। মুকেশ আম্বানিকে পেছনে ফেলেছেন গৌতম আদানি। ২০২৪ সালের হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট এমন তথ্য দিয়েছে। গৌতম আদানি ও তাঁর পরিবারের মোট সম্পদ ১১ লাখ ৬০ হাজার কোটি রুপি বলে হুরুনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত এক বছরে গৌতম আদানির সম্পদ ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। চার বছর আগে তিনি হুরুনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিলেন। তালিকার শীর্ষে গৌতম আদানির এই উত্থান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এ কারণে যে গত বছর আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগ তুলে হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

হুরুন রিচ লিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬২ বছর বয়সী গৌতম আদানি ও তাঁর পরিবার হিনডেনবার্গের অভিযোগ মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে চলতি বছরের তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। তিনি নিজের চেষ্টায় উদ্যোক্তা হয়েছেন। গত ৫ বছরে শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে তাঁর সম্পদই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে।

হুরুনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত এক বছরের আদানি গোষ্ঠীর সব কটি কোম্পানির শেয়ারের দামই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আদানি পোর্টসের শেয়ারের দাম ৯৮ শতাংশ বেড়েছে। মূলত সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং নতুন বন্দর ও কনটেইনার টার্মিনালের প্রস্তাবিত অধিগ্রহণের কারণে শেয়ারের এই মূল্য বৃদ্ধি।

অন্যদিকে জ্বালানি খাতের কোম্পানি আদানি এনার্জি, আদানি গ্যাস, আদানি ট্রান্সমিশন ও আদানি পাওয়ারের শেয়ারের দাম গড়ে ৭৬ শতাংশ বেড়েছে।

হুরুনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ ১৪ হাজার কোটি রুপি। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতে বিলিয়নিয়ার বা শত কোটি ডলারের মালিকের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩৩৪ জন হয়েছে। এই সংখ্যা ভারতের জন্য একটি রেকর্ড। হুরুনের প্রতিবেদনে এই বিষয় উঠে এসেছে।

হুরুন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও গবেষক আনাস রহমান জুনায়েদ বলেছেন, ভারত এখন ‘এশিয়ার সম্পদ তৈরির ইঞ্জিন হিসেবে আবির্ভূত’ হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা যেখানে ২৯ শতাংশ বেড়েছে, সেখানে চীনে এমন ধনীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমেছে।

গৌতম আদানি ও মুকেশ আম্বানির পর ধনীদের তালিকায় রয়েছেন এইচসিএল টেকনোলজির শিব নাদার ও তাঁর পরিবার। তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৩ লাখ ১৪ হাজার কোটি রুপি।

চতুর্থ স্থান রয়েছেন সিরাম ইনস্টিটিউটের সাইরাস এস পুনাওয়ালা ও তাঁর পরিবার। তাঁদের সম্পদ ২ লাখ ৮৯ হাজার কোটি রুপি। পরের স্থানে থাকা সান ফার্মাসিউটিক্যালসের দিলীপ সাংভির সম্পদের মূল্য ২ লাখ ৪৯ হাজার কোটি রুপি।

হুরুনের প্রতিবেদনে আরও জানান হয়েছে যে ভারতে এখন প্রতি পাঁচ দিনে একজন করে বিলিওনিয়ার তৈরি হচ্ছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে বিলিওনিয়ারের সংখ্যা ছিল ২৫৯ জন।

সম্প্রতি হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্টও বেশ মোটাতাজা হয়েছে। এক হাজার কোটি রুপি বা তার চেয়ে বেশি সম্পদে আছে, এমন ভারতীয়র সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বিজনেস টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ বছর আগের তুলনায় এই বিভাগে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫০ শতাংশ। এই প্রথমবারের মতো তালিকায় ১ হাজার ৫০০’র বেশি নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে, যা ৫ বছর আগের তুলনায় ৮৬ শতাংশ বেশি।

হুরুনের এই তালিকায় রয়েছে পরিবার পরিচালিত ব্যবসা থেকে শুরু করে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা, ব্যক্তি পর্যায়ের সম্পদ বিনিয়োগকারী, নতুন ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগকারী, পরের প্রজন্মের নেতৃত্ব ও সিনেমার তারকা।

সবচেয়ে কম বয়সী ভারতীয় বিলিওনিয়ার হলেন ২১ বছর বয়সী কাইভাল্য ভোহরা। তিনি ৫০০ কোটি ডলার মূল্যমানের স্টার্টআপ কোম্পানি জেপটোর সহপ্রতিষ্ঠাতা। এই প্রতিষ্ঠানের আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা হলেন ২২ বছর বয়সী আদিত পালিচা। তিনি এখন ভারতের দ্বিতীয় কম বয়সী বিলিওনিয়ার।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: