সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত দুবাই ভিত্তিক অ্যাপ টেলিগ্রাম। নজরদারির সুযোগ না থাকায় অনেক দেশেই নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখা হয় জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপটিকে। ঠিক এমন অভিযোগ দেখিয়ে টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরভকে গ্রেফতার করেছে ফ্রান্স। দাবি, এটিকে গোপন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধীরা।
২৪ আগস্ট, শনিবার স্থানীয় সময় রাতে আজারবাইজান থেকে প্রাইভেট জেটে ফ্রান্সে পৌঁছান ৩৯ বছর বয়সী রুশ নাগরিক পাভেল দুরভ। আগে থে0কেই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ফরাসি সরকার। প্যারিসের কাছাকাছি লা বু’জে বিমানবন্দর থেকেই আটক করা হয় পাভেলকে।
জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তিনি। অ্যাপটির বিরুদ্ধে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে ফরাসি সরকার। দাবি- নজরদারির সুযোগ না থাকায়; অপরাধী চক্রের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত অ্যাপটি। তাই তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হয়েছে পাভেলকে।
ফ্রান্সে রাশিয়ার দূতাবাসের তরফ থেকে বলা হয়েছে শিগগিরই পাভেলের গ্রেফতার সংক্রান্ত বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করবে তারা।
২০১৩ সালে, টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পাভেল। কয়েক বছরের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অ্যাপটি। বিশেষ করে রাশিয়া, ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোয় অন্যতম প্রধান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এটি। বর্তমানে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯০ কোটি। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী পাভেলের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
তবে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলো যেমন সরকার বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করে, সেদিক থেকে ব্যতিক্রম টেলিগ্রাম। যা বর্তমান সময়ে ছবি, ভিডিও, বার্তা পাঠানোর সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। নিজের অ্যাপকে ভূরাজনৈতিক গেইমের অংশ বানাতে চাননা বলে জানান পাভেল। সেকারণেই বিভিন্ন দেশে সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে অ্যাপটিকে।
পাভেল দুরভের নিজের দেশ রাশিয়াতেই ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ হয় টেলিগ্রাম। তিনবছর পর অবশ্য আবার চালু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুতিন সরকারের বিরোধী দমন নীতির প্রতি সমর্থন না জানানোয়, ২০১৪ সালে দেশ ছাড়তে হয় পাভেলকে। এরপর থেকে দুবাই থেকে পরিচালিত হয় টেলিগ্রামের কার্যক্রম।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: