মোদিকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছে সিআইএ: রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম

মুনা নিউজ ডেস্ক | ২২ আগস্ট ২০২৪ ২১:০৩

ফাইল ছবি ফাইল ছবি

বিগত সপ্তাহগুলোতে ভারতের বিরোধীদলীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বেশ কয়েক দফায় সাক্ষাৎ করেছেন কূটনীতিকেরা। এমনটাই দাবি করেছে, রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা স্পুৎনিকের ভারতীয় সংস্করণ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ভারতে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি সরকার পতনেরও চেষ্টা চালানোর পরিকল্পনা থাকতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রগুলো হায়দরাবাদে মিশনের প্রধান কনসাল জেনারেল জেনিফার লারসন ও ভারতীয় বিরোধী দলগুলোর নেতাদের মধ্যে হওয়া একাধিক বৈঠক নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজরও রাখছে।

গত সোমবার জেনিফার লারসন হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগেও এই দুজন বৈঠক করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের বৈঠক নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেবল ওয়াইসি নন, জেনিফার তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ও অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইড়ুর সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।

ভারতের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনের পর কিং মেকার হিসেবে আবির্ভূত হন। অল্পের জন্য সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসনসংখ্যা থেকে দূরে ছিল বিজেপি। মাত্র ১৬টি আসন নিয়ে বিজেপির এনডিএ জোটে যোগ নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেন তিনি।

মোদি ও বিজেপিকে সরকার গঠনে সাহায্য করলেও সম্প্রতি লোকসভায় বিজেপি উত্থাপিত ওয়াকফ–সংক্রান্ত একটি বিলের বিরোধিতা করেন চন্দ্রবাবু নাইড়ু। তাঁর এই অবস্থান বিজেপির অভ্যন্তরে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে গোয়েন্দা সূত্র কূটনীতিকদের সঙ্গে কথোপকথনে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় আলোচনার সম্ভাবনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ওয়াকফ আইন নিয়ে মতপার্থক্য নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’ আনার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়নি সূত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র বলেছে, ‘তারা আমেরিকান ব্যাপটিস্ট চার্চের পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহায়তায় অন্ধ্র ব্যাপটিস্ট চার্চকে ব্যবহার করে পক্ষ পরিবর্তন করার জন্য চন্দ্রবাবু নাইড়ুর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে। অন্ধ্র ব্যাপটিস্ট চার্চ এই মুহূর্তে সিআইএয়ের পকেটের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার এবং তা চন্দ্রবাবু নাইড়ুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে।’

বিরোধীদলীয় নেতা ও বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে বৈঠক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। বিশেষ করে অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানা প্রদেশে শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) শিল্প ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংযোগ রয়েছে। তবে, আশপাশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণেই সত্যিকারের কিছু উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

অপর একটি গোয়েন্দা সূত্র অবশ্য ওয়াইসি ও জেনিফার লারসনের মধ্যকার বৈঠককে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখতে নারাজ। তাঁর মতে, ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরোধীদলীয় নেতাদের বিদেশি কূটনীতিকদের বৈঠকের বিষয়টি অনেক পুরোনো। আর ভারতে যেহেতু বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠীর বাস এবং ওয়াইসি তাদের মুখপাত্র, তাই লারসনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: