সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে নিজের বাবা রাজা সালমানের স্বাক্ষর জাল করেছেন। ১৯ আগস্ট, সোমবার বিবিসি-তে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন সাবেক সৌদি কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরি।
সাক্ষাৎকারে আল-জাবরি বলেছেন, রাজা সালমানের পরিবর্তে যুবরাজ নিজে রাজ আদেশে স্বাক্ষর করে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কর্মকর্তা তা নিশ্চিত করেছেন। সামরিক হস্তক্ষেপ অনুমোদন করে রাজ আদেশ থাকার বিষয়টি জানতে পেরে আমরা হতবাক হয়েছিলাম।’
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। তখন ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে।
সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এই কর্মকর্তা বর্তমানে কানাডায় নির্বাসনে আছেন। তার সন্তানদের কারাবন্দি করাকে কেন্দ্র করে দেশের সঙ্গে তার বহু বছর ধরেই তিক্ত সম্পর্ক চলছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবেই সন্তানদের আটক করা হয়েছে বলে মনে করেন আল-জাবরি।
তিনি বিবিসিকে আরও বলেন, ‘যুবরাজ নিজের বাবার স্বাক্ষর জাল করেছিলেন। রাজার মানসিক অবস্থার ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছিল।’
অবশ্য আল-জাবরি নিজের দাবির সপক্ষে কোনও প্রমাণ হাজির করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সৌদি আরব। দেশটি তাকে একজন ‘নিন্দিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তা’ বলে অভিহিত করেছে।
আল-জাবরির অভিযোগ যখন এলো, যুবরাজ সালমান তত দিনে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাকে সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যুবরাজ হওয়ার পর থেকেই তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারার সামান্য সম্ভাবনাকে তিনি কঠোর হাতে দমন করে আসছেন।
ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি প্রাণহানি হয়েছে, যা বিশ্বের ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয়ের একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যুদ্ধ শুরুর সময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে ছিলেন যুবরাজ সালমান।
গাজায় যুদ্ধের শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের সমর্থন ও সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হুথিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক নৌযানে হামলা চালিয়ে আসছে।
সূত্র : এপি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: