উত্তর কোরিয়ার আবর্জনাভর্তি বেলুন এবার পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলাকায়। ২৪ জুলাই বুধবার সকালে বেলুনটি পতিত হয়। সিউলের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সিএনএর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত মে মাস থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় আবর্জনাভর্তি বেলুন পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। তবে এর আগে কোনো বেলুনই প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এত কাছে আসেনি। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিউলে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে শত শত নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও তাঁরা কেউই বেলুনটিকে বাধা দিতে পারেননি।
এদিকে, আবর্জনাভর্তি বেলুনটি পতিত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে কেমিক্যাল রেসপন্স টিম পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রেসিডেনশিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস এএফপিকে বলেছে, ‘আমাদের রাসায়নিক, জৈবিক ও তেজস্ক্রিয় যুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দল ঘটনাস্থল থেকে আর্বজনাভর্তি বেলুনটি সংগ্রহ করেছে। তদন্তের পর বলা যাবে বেলুনটি কোনো ঝুঁকি বহন করে এনেছে কি না।’
এর আগে, গত জুন মাসে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ায় অন্তত ৩১০টি আবর্জনাভর্তি বেলুন পাঠিয়েছে। উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের ক্ষমতাধর বোন কিম ইয়ো জং দক্ষিণের বিরুদ্ধে নতুন করে পাল্টা প্রতিশোধের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই এই বেলুনগুলো পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, গত মে মাসের শেষ দিকে কমপক্ষে ২৬০টি বেলুনের সঙ্গে মানুষের মলসহ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি ব্যাগ জুড়ে দিয়ে সেগুলো দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠায় উত্তর। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার দেশটির ৯টি প্রদেশের ৮ টিতেই ময়লাসহ উড়ে আসা বেলুন পাওয়া গেছে। এগুলো এখন বিশ্লেষণ করে দেখছে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ।
১৯৫০-এর দশকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের সময় থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণার অংশ হিসেবে বেলুন ব্যবহার করে আসছে। এ অবস্থায় নতুন বেলুনগুলোতে ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে উত্তর কোরিয়া কোনো প্রোপাগান্ডা লিফলেট পাঠিয়েছে কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ময়লাসহ বেলুন উড়ে আসার ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং বিশেষ করে রাজধানী সিউলের উত্তর অংশে বসবাস করা নাগরিকদের কাছে মঙ্গলবার দিনের শেষ ভাগে খুদেবার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য কর্তৃপক্ষগুলো। এসব বার্তায় নাগরিকদের বাড়ির বাইরের কাজকর্ম নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, ময়লা-আবর্জনাসহ এ ধরনের কোনো বেলুনসদৃশ বা অচেনা বস্তু নজরে পড়লেই যেন তারা নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পগুলোকে অবহিত করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: