ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনব্যার্গ জানিয়েছেন, দেশের জিডিপির দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে তুলে রাখতে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র।
৩২টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ২৩টি সদস্য রাষ্ট্রই আশা করছে যে- এবছর তারা তাদের সামরিক ব্যয় বিষয়ক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবে। গত বছর এমন রাষ্ট্রের সংখ্যা ছিল ১০টি। ফেব্রুয়ারি মাসেও কেবল ১৮টি রাষ্ট্র এই শর্ত পূরণ করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
স্টলটেনবের্গ বলেন, ‘এটা ইউরোপ ও অ্যামেরিকার জন্য ভালো। বিশেষভাবে ভালো কারণ বাড়তি অর্থের অনেকটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খরচ হচ্ছে।'
ন্যাটো প্রতিরক্ষা অর্থায়ন লক্ষ্য বেঁধে দেয়া হয়েছিল ২০১৪ সালে। উদ্দেশ্য ছিল, সদস্য রাষ্ট্রগুলি তাদের জিডিপির দুই শতাংশ ব্যয় করবে জাতীয় ও জোটের যৌথ প্রতিরক্ষা খাতে। সাথে, বার্ষিক প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ২০ শতাংশ অর্থ দিয়ে কেনা হবে নতুন যন্ত্রপাতি। গত বছর এই শর্ত পূরণ করে খুব কম সংখ্যায় সদস্য রাষ্ট্র, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অসন্তুষ্ট ছিল।
পরিসংখ্যান বলছে, কে কত বেশি অর্থায়ন করতে পারে, সেই লড়াইয়ে যাওয়ার বদলে এই দুই শতাংশ খরচের বিষয়টি বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্র ভালো ভাবে নিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, স্লোভেনিয়া ও ইতালির মতো রাষ্ট্রও তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়েছে।জাতীয় জিডিপির সবচেয়ে বড় অংশ প্রতিরক্ষা খাতে রেখে থাকে পোল্যান্ড (৪ দশমিক ১২ শতাংশ), এস্তোনিয়া (৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যারা লক্ষণীয়ভাবে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে, তারা হলো জার্মানি ও ফ্রান্স।
১৯৯০ সালের পর এই প্রথম দুই শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলো জার্মানি। ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে সামরিক খাতে খরচ বাড়িয়েছে জার্মানি।
নেদারল্যান্ডসের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী, মার্ক রুটে ন্যাটোর পরবর্তী মহাসচিব হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নেদারল্যান্ডসও তার প্রতিরক্ষা ব্যয় লক্ষ্য পূরণ করার আশা করছে।
নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, যেখানে জয়লাভের আশা দেখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পও। সম্প্রতি তিনি বলেন, যে সকল ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র তাদের আর্থিক প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করতে পারবে না, তাদের আক্রমণ করার জন্য রাশিয়াকে ‘উদ্বুদ্ধ' করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের সুরক্ষা দেব না। বরং রাশিয়াকে উৎসাহিত করব তারা যা চায়, তাই করার জন্য। টাকা দিতে হবে, খরচ মেটাতে হবে।' ট্রাম্পের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে হোয়াইট হাউস।
স্টলটেনবের্গ বলেন যে- জোটসঙ্গীরা একে অপরকে সুরক্ষা না দেবার বিষয়টি সবার নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: